পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।
৪১

 আমি। আচ্ছা, সে যদি নির্দ্দোষ, তবে যে সময় আমরা দরজা ভাঙ্গিয়া বাড়ীতে প্রবেশ করিলাম, আমাদের দেখিয়া সেরূপ ভাবে আমাদের দিকে পিস্তল তুলিয়া দাঁড়াইয়াছিল কেন? এই সকল কথা স্পষ্ট বলিলেই ত হইত। আর আমি গিয়া পশ্চাৎদিক হইতে তাহাকে বাগাইয়া না ধরিলে, সে ত আমাদের সম্মুখেই ইন্‌স্পেক্টার সাহেবকে গুলি করিয়া মারিত।

 বড় সাহেব। সে বলে—হঠাৎ তাহার সম্মুখে একটা আত্মহত্যা হওয়ায়, তখন তাহার মাথা খারাপ হইয়া যায়। সে কি করিয়াছে, তাহার জ্ঞান নাই। তবে ভয়ে সে পলাইবার চেষ্টা করে, আর আত্মরক্ষার জন্য তাহার আত্মহত্যাকারী প্রভুর পিস্তলটি সে হাতে করিয়া লয়—এইমাত্র তাহার স্মরণ আছে। আর কোন কথা তাহার স্মরণ নাই।

 আমি। এই সকল এজাহার সে কি আপনার নিকট দিয়াছে?

 বড় সাহেব। না—পুলিসের নিকট সে কোন এজাহার দেয় নাই। পীড়াপীড়ি করিলে স্পষ্ট বলিত, সে পুলিসের নিকট কোন এজাহার দিবে না। সে যে একজন আইনজ্ঞ পাকা বদমায়েস, তাহার কথাবার্ত্তার ধরণ দেখিয়াই বুঝিয়া ছিলাম। এ সকল এজাহার সে করোণারের প্রশ্নের উত্তরে দিয়াছিল, করোনার্স কোর্ট হইতে আমরা সে সকল এজাহরের নকল লইয়াছি। আর আমিও সে সময় সে স্থানে উপস্থিত ছিলাম।

 আমার আর কোন কথা জানিবার আবশ্যক ছিল না, সুতরাং আমি সেদিনকার মত সাহেবের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলাম। এ দিনও রাত্রে আমার নিদ্রা হইল না—নানা রকম চিন্তা আসিয়া মনের মধ্যে বড়ই উৎপাত করিতে লাগিল।