পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তম পরিচ্ছেদ।

 পরদিন অতি প্রত্যুষে আমি চাঁপাতলা নীমুখান্‌সামা লেনের সেই ফেরোজা বাড়ীওয়ালীর সন্ধানে চলিলাম। বেলা নয়টা পর্য্যন্ত খুঁজিয়া খুঁজিয়া একবারে হয়রাণ হইলাম—কেহ আর ফেরোজা বাড়ীওয়ালীর সন্ধান দিতে পারিল না। তখন বুঝিলাম, আসামীর এজাহারের এই অংশ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

 শেষে আমি যখন নিরাশ হইয়া গৃহে ফিরিয়া আসিতেছি, এমন সময় দেখি—একটা মুটে সম্মুখের গলির ভিতর হইতে এক ঝাঁকা খানার মোট লইয়া বাহির হইয়া আসিতেছে। সান্‌কীর মধ্যে অন্নব্যঞ্জন রাখিয়া অপর সান্‌কী ঢাকা দিয়া কাপড় দিয়া বাঁধা—এইরূপ ২০।২৫ জনের খানা সেই মোটের মধ্যে ছিল। আমি তাহাকে ফেরোজা বাড়ীওয়ালীর কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। সেই মুটে কহিল, ওকথা বল্‌লে কেউ তাকে চিন্‌তে পারবে না—হোটেলওয়ালী বল্‌লে সকলেই তাকে চিন্‌তে পারে। আপনি এই গলির মধ্যে যান—ডানদিকের বড় খোলার ঘরেই তার হোটেল, আমি সেই হোটেল থেকেই আস্‌ছি।”

 মুটের কথায় আমার মন বড়ই আনন্দ হইল। আমি তৎক্ষণাৎ সেই গলির মধ্যে গেলাম। গলির মধ্যে গিয়া সে হোটেল খুঁজিয়া লইতে আর আমার কষ্ট পাইতে হইল না। পিঁয়াজ ও রসুনের গন্ধে সে হোটেল একবারে আমোদিত ছিল।