পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।
৪৫

 তখন সেই ফেরোজা একটু ভয় পাইয়া আমায় একটা ঘরের মধ্যে লইয়া গিয়া সেই সিন্দুক দেখাইয়া দিল। সিন্দুকটা চাবিবদ্ধ ছিল। আমি ফেরোজার নিকট হইতে একটা চাবির তাড়া লইয়া সে সিন্দুক খুলিয়া ফেলিলাম। খুলিয়া দেখি— সে সিন্দুকে অন্য কিছুই নাই,—দুইটা পা-জামা, একটা কোর্ত্তা, একটা চাপ কান, একটা কোট, আর একটা টুপী ছিল। সিন্দুকের উপর উর্দ্দুভাষায় কি লেখা ছিল, আমি একজন উর্দ্দু-জানা লোক ডাকিয়া পড়াইলাম। সে পড়িল—মহম্মদ আলি—সিঙ্গাপুর। বাক্সের মধ্যে অন্য কোন চিঠিপত্র কিছুই পাইলাম না। আমার মাথা ঘুরিয়া গেল! তবে কি এ ব্যক্তি যথার্থই মহম্মদ আলি—সিঙ্গাপুর হইতে কলিকাতায় আসিয়াছে? আমি তখন অগত্যা বিষণ্ণমনে সে স্থান হইতে বাহিরে আসিলাম। মনের সে উৎসাহ আর নাই—আমার নিজের অনুমানের উপর তখন বড়ই একটা সন্দেহ হইল। আর কি অনুসন্ধান করিব—আমি তখন আর কিছুই ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলাম না।

 বিষণ্ণমনে থানায় ফিরিয়া আসিলাম। কেনারাম দাদা আমায় দেখিয়া নানা প্রশ্ন আরম্ভ করিয়া দিল, কিন্তু তখন আমার মন এতই খারাপ যে, তাহার সে সকল প্রশ্নের আর উত্তর দিকে পারিলাম না। সমস্ত দিন কাহারও সহিত ভাল করিয়া কথা পর্য্যন্ত কহিতে পারিলাম না। মনে মনে যে উচ্চাভিলাষ জন্মিয়াছিল,— আকাশে যে একটা অট্টালিকা গাঁথিয়া তুলিতেছিলাম, সে সকল একবারে চুরমার হইয়া গেল।

 মন যতই বিষণ্ণ থাকুক না কেন, আমাদের কর্ত্তব্যকর্ম্ম অবহেলা করিলে চলবে না। ঠিক সন্ধ্যার সময় আমায় পুনরায় বড় সাহে-