পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।
৪৭

 বড়সাহেব অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিলেন, “একমাত্র উপায় আছে, কিন্তু সে বড় দুঃসাহসের কাজ।”

 আমি কহিলাম,—“কিরূপ আজ্ঞা করুন।”

 বড়সাহেব কহিলেন,—“সে এক নূতন রকম উপায়। কিন্তু আমি দেখিতেছি—সে উপায় ভিন্ন আর আমাদের কোন গতি নাই। কৌশলে অসাবধান হইয়া আসামীকে পলাইবার সুযোগ করিয়া দিতে হইবে। আর অলক্ষ্যে তাহার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিয়া তাহার অনুসরণ করিতে হইবে। কিন্তু খুব সতর্কতার সহিত এই কার্য্য করা চাই। আসামী যেন ঘুণাক্ষরে আমাদের কৌশল বুঝিতে না পারে। সে যদি জানিতে পারে যে, তাহাকে ফাঁদে ফেলিবার জন্য আমরা এই ষড়যন্ত্র করিয়াছি, তাহা হইলে আমাদের এ কৌশল আর খাটিবে না। সে কারামুক্ত হইয়া সেই ফেরোজা হােটেলওয়ালীর বাড়ী যায়—কি আর কোথায় যায়, সেই কথা জানিতে পারিলে সে ব্যক্তি যে কে, তাহা জানিতে পারা যাইবে। তখন তাহাকে গ্রেপ্তার করলে চলিবে। কাল প্রাতে পুলিসকোর্টে আনিবার ভাণ করিয়া আসামীকে পলাইবার সুযোগ করিয়া দিবে, তার পর যেমন যেমন বলছি সেইরূপ কার্য্য করিবে। তোমার সঙ্গে আর যাহাকে যাহাকে লইতে ইচ্ছা কর, তুমি লইতে পার, কিন্তু তােমাদের সকলকেই ছদ্মবেশে থাকিতে হইবে।

 আমি “যে আজ্ঞা” বলিয়া সাহেবের নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিলাম। পরদিন প্রাতে বড়সাহেবের আজ্ঞামত কার্য্য করা হইল। আসামীকে হাজতের বাহিরে আনিয়া কৌশলে তাহাকে পলায়নের সুযােগ করিয়া দেওয়া হইল। আসামী সে সুযােগ