পাতা:উৎকলে শ্রীকৃষ্ণ-চৈতন্য.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাজপুর। VO) যখন শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য যাজপুরে উপস্থিত হইলেন তখন যাজপুর হিন্দু নগর, হিন্দুরাজশাসিত। কিন্তু শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য যে যাজপুরে পরিভ্রমণ করিয়া অসীম আনন্দ অনুভব করিয়াছিলেন, যে যাজপুরের “লিঙ্গশত” ও দেবমন্দিরসমূহ পরিদর্শনার্থ তিনি শিষ্য ও অনুচরবর্গের উপেক্ষা করিয়া র্তাহাদিগের নিকট হইতে অদৃশ্য হইয়াছিলেন, কেশৱী-বংশের সে রাজ- ; ধানীর গৌরব, সে দেবমন্দিব শ্রেণী ও দেবমূৰ্ত্তিসমূহ এখন অদৃশ্য হইয়াছে। প্রতাপরুদ্রের পরলোকগমনের সহিত যাজপুরের শোভা আস্তাচলৗভিমুখী হইয়াছিল। বহুপূৰ্ব্ব হইতেই মহানদী ও কাটিজুড়ির অন্তর্বত্তী কটক সহর উড়িষ্যার রাজাগণের রাজধানী হইয়াছিল। কিন্তু তখনও ব্ৰহ্মার যজ্ঞাপুর, পবিত্র বিরজাক্ষেত্ৰ, উৎকলের সর্বোৎকৃষ্ট নগর স্বরূপ ব্যবহৃত হইত। প্ৰতাপ রুদ্রের অমিততেজঃপ্রভাবে মুসলমান জয়স্রোতঃ কিছুকালের নিমিত্ত প্ৰতিরুদ্ধ হইয়াছিল ; এমন কি তঁহার চতুরঙ্গ বল ভাগীরথীর শুভ্ৰ সলিলে অবলীলাক্রমে লীলা করিতে সমর্থ হইয়াছিল। গঙ্গবংশের লোপের পর তঁহাদিগের মন্ত্রিবংশ চতুস্ত্রিংশৎ বর্ষাকাল উৎকল প্ৰদেশ শাসন করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু বঙ্গের স্বাধীন নবাব সলিমানের সৈন্যাধ্যক্ষ কালাপাহাড় ১৫৬৪ খৃঃ অব্দে রাজা মুকুন্দদেবকে যাজপুরের নিকটেই পরাভূত ও নিহত করিয়া উৎকলে হিন্দুরাজ্যের লোপ করিয়াছিল। কালাপাহাড় এককালে আৰ্য্যধৰ্ম্মী ছিল ও পরে আর্য্যধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিরা মুসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন পূর্বক আৰ্য ধৰ্ম্মের লোপের নিমিত্ত নিতান্ত উৎসুক হইয়াছিল। শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য যে সহস্ৰাধিক দেবমন্দির ও দেবমূৰ্ত্তি দেখিয়া পুলকিত হইয়াছিলেন, তাহার অধিকাংশই বিজয়ীগণ বিভগ্ন ও বিক্ষিপ্ত করিয়াছিল। এখনও অসংখ্য শৈবমন্দিরের, অসংখ্য ইষ্টকালয়ের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায় ; এখনও যাজপুরে উড়িষ্যাবাসীদিগের ভাস্কর্যকাৰ্য্যের নিপুণতার অশেষ পরিচয় পাওয়া যায় ; কিন্তু সে পুরাতন গৌরবজ্যোতিঃ কোথায়! মুসলমানদিগের জয়স্রোতে,