পাতা:উৎসর্গ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাহুর করুণ আকর্ষণে, কিছু নাহি চাহি যাঁর।
তিনি কেন চাহিলেন, ভালোবাসিলেন নির্বিকার,
পরিলেন পরিণয়পাশ! এই যে প্রেমের লীলা
ইহারি কাহিনী বহে, হে শৈল, তোমার যত শিলা!

আলমোড়া ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৩১০


২৭

তুমি আছ হিমাচল, ভারতের অনন্তসঞ্চিত
তপস্যার মতো। স্তব্ধ ভূমানন্দ যেন রোমাঞ্চিত
নিবিড় নিগৃঢ় ভাবে পথশূন্য তোমার নির্জনে,
নিষ্কলঙ্ক নীহারে অভ্রভেদী আত্মবিসর্জনে।
তোমার সহস্র শৃঙ্গ বাহু তুলি কহিছে নীরবে
ঋষির আশ্বাসবাণী, ‘শুন শুন বিশ্বজন সবে,
জেনেছি, জেনেছি আমি।’ যে ওঙ্কার আনন্দ-আলোতে
আদি-অন্ত-বিহীনের অখণ্ড অমৃতলোক-পানে
সে আজি উঠিছে বাজি, গিরি, তব বিপুল পাষাণে।
একদিন এ ভারতে বনে বনে হোমাগ্নি-আহুতি
ভাষাহারা মহাবার্তা প্রকাশিতে করেছে আকূতি
সেই বহ্নিবাণী আজি অচল প্রস্তরশিখারূপে
শৃঙ্গে শৃঙ্গে কোন্ মন্ত্র উচ্ছ্বাসিছে মেঘধূম্রস্তূপে।

জোড়াসাঁকো। কলিকাতা ৮ আষাঢ় [১৩১০]

৫৩