পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরূপ সন্ধ্যার পানে চাইলুম। ওখান থেকে এসে নীলবর্ণার দিকে চলি। তামা পাহাড়ের ওপর উঠলুম পিয়ালতল দিয়ে। বড় বট গাছটাতে একরূপ জোনাকী জলচে, ওধারে উঠেচে ত্রয়োদশীর চাদ, তামা পাহাড়ের বিরাট অধিত্যকার গায়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে দীর্ঘ বড় বড় ছায় পড়েচে । আমরা দু’ধারে পাহাড়ের গিরিপথট পার হয়ে নামকুম ওপারের জ্যোৎস্নাশুল উপত্যকায়। বনতুলসীর জঙ্গল আর তার মাঝে মাঝে দাড়িয়ে আছে শাল ও তামাল। চারিধারে রূপ যেন থৈ গৈ করচে। পাহাড়ের মাথায় এদিকে ওদিকে দু’চারটা নক্ষত্র। নীল ঋণার জল পার হয়ে বরম্ডেরার পথে একজন পাহাড়ী লোকের সঙ্গে দেখা । সে এক একটা লাঠি হাতে গান গাইতে গাইতে চলেচে কুলামাতোর দিকে । তাকে বল্লাম--অত জঙ্গলে এত রাত্রে এক যাধি, যদি বাধের হাতে পড়িস্ ! সে বল্লে—খেদিয়ে দিব বাবু! অর্থাৎ সে লাঠি দিয়ে বাধ তাড়িয়ে দেবে। আমরা আর একটু এগিয়ে যেতেই চারিধারের পাহাড়ী অধিতাকার নির্জনতায় জ্যোৎস্না.দীত সোণৰ্য্যে যেন কেমন হয়ে গিযেচি। একটা ভারি আশ্চর্য জিনিস দেখা গেল । দুর ধৰ্ব্ব শৈল্পমালা গায় একটা নক্ষত্র জছিল, খানিধক্ষণ থেকে সেটা আমরা দেখচি। তার আমি মাঝে মাঝে দেখচি ডাইনের কথাম পাহাড়ের দিকে বাংলা দেশের আলো ছায়া ভরা কোজাগরী পূর্ণিমা রাত্রের কথা ভাবচি, এমন সময় নক্ষত্রটা যেন টুপ করে খসে পড়ে গেল পাহাড়ের চালু থেকে আর সেটা দেখা গেল না। আমরা দুজনেই অবাক হয়ে রইলুম। সবুজ ঝর্ণার কাছে এসে বসলুম, ওখানে একটা সুবৃহৎ শিমুল গাছের শাখা নত হয়ে আছে ঝর্ণার জলের ওপর কুলুকুলু ক্ষীণ শব্দ হচ্ছে ঝর্ণার জলধারার, জ্যোৎস্ন রাত্রে ঝর্ণার জল চিক্‌চিক্‌ করচে, বড় শিমুল গাছের মাথায় একরাশ জোনাকী জব্‌চে, সে এক অপরূপ ছবি। ছবিটা বহুদিন মনে থাকবে। তারপর রুথমৃের পাহাড়ের একেবারে মাথায় একটা বড় শিলাখণ্ডের ওপরে উঠে বসি। যেদিকে চাই, জ্যোৎসাবিধৌত বনরাজিশোভিত শৈলমাল, দুরে টাটা কারখানায় রক্ত আভ যেন বহুদূরের কোন অজানা আগ্নেয়গিরির