পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহেন্দ্র সেক্রার দোকান থেকে আরম্ভ ক’রে সজীর গোলা পৰ্য্যস্ত। হাটে কত ঘরামী ও চাষী জিগ্যেস করে—কবে এলেন বাৰু ? ওদের সকলকে যে কত ভালবাসি, কত ভালবাসি ওদের এই সরল আত্মীয়তাটুকু, ওদের মুখের মিষ্ট আলাপ ! যুগল বৈষ্ণব এসে আমার ছেলেবেলার গল্প করলে, আগু ঠাকুর এসে আমায় অনুযোগ করতে বসলে, আমি বিয়ে করচি না কেন এই বলে। ব্ৰজেন মাস্টার নতুন লাইব্রেরী দেখাতে নিয়ে গেল, মন্ত্র রায় তার বিড়ির দোকানে ডেকে নিয়ে বসিয়ে বিড়ি খাওয়ালে, যুগল ময়রা নতুন তৈরী দোকান ঘরে বসিয়ে তামাক সেজে দিলে—এদের যত্ন আত্মীয়তার ঋণ কখনো শুধুতে পারবে না। গীের কলুর দোকানে চা কিনতে গেলাম, সে আর আমায় কিছুতেই ছাড়তে চায় না। সেও আমার এক সহপাঠী, ওই তুততলার স্কুলে ১৩১০-১১ সালে তার সঙ্গেও পড়েচি। সে সেই কথা ওঠালে, আবার একবার হিসেব হোল কে কে আমাদের সঙ্গে পড়তে | একবছর পরে দেশে যখন আসি, সবাই আমায় পেয়ে আবার সেই পুরানো কথা গুলো ঝালিয়ে নেয়। এ বছরট কলকাতার বড় কৰ্ম্মব্যস্ত জীবন কাটিয়েটি । এই একটা মাস এদের সরল সাহচৰ্য্য, সুপ্রচুর গাছপালার সান্নিধ্য, নদী, মাঠ, বনের রূপবিলাস আমার সমস্ত ক্লান্তি, সমস্ত অবসাদ জুড়িয়ে দেয়। গত দেড় মাস রোজ রাত ৩০টার সময় উঠে ইলেকটিক লাইট জেলে থাত দেখতে বলেচি, সেই কাজ শুরু করেচি আর রাত ১২টা পৰ্য্যস্ত চলেচে নানা'কাজ, চাকুরী, লেখা, পাটি, টুকার তাগাদ, বক্তৃতা করা ও শোনা, বন্ধুবান্ধবের বাড়ী দেখা করতে যাওয়া, আমার এখানে যারা আসেন তাদের সঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত—সমানে চলেচে । এদিকে শুয়েচি রাত সাড়ে বারোটা—আবার ওদিকে উঠেচি রাত সাড়ে তিনটাতে। এখানে এসে বেঁচেছি একটু মন ছড়িয়ে বিশ্রাম করে। হাট থেকে এসে নদীর ধারের মাঠে বেড়াতে গিয়ে এই কথাই ভাবছিলুম। ঝির-ঝির করচে হাওয়া, সোদালি ফুল ফুটেচে নদীর ধারে । কোকিল ডার্কচে–বেল পড়ে গিয়েচে একেবারে—কি স্বন্দর যে লাগৃছিল। আর উঠতে ইচ্ছে যায় না নদীর ধার থেকে, কি অদ্ভূত শাস্তি ! এখন বসে লিখচি, অনেক রাত হয়েচে । বাশ জঙ্গলের মাথায় বিশাল