পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে যেন প্রথম বর্ষার দিনে পায়ে হেঁটে বহুদূর গ্রামের উদেশে যায়, তবেই সে বাংলাকে চিনবে, পার্থী, আর বন সম্পদ, তার পুষ্পরাজি, তার মেয়েদের দেখবে, চিনবে, ভালও বাসবে। আমি এই নেশাতেই প্রতি বৎসর এই সময় বেরিয়ে পড়ি । বাগানগায়ের পথে বড় একটা বট গাছের তলায় বসে লিখচি। চারি ধারে মাঠ, বৃষ্টি পড়চে ঝর ঝর করে, বেলা কত হয়েচে মেঘে আন্দাজ করা যায় না, জোলে হাওয়ায় আউসের ভূই থেকে ধানের কচি জাওলার মৃদ্ধ সুগন্ধ ভেসে আসচে, বট গাছের ডালে কত কি পার্থী ডাক্‌চে, মাঠের মধ্যে অগন্ত খেজুর গাছ। চাষার ক্ষেতে নিড়েন দিচ্ছে, তামাক খাচ্ছে, নীল মেঘের কোলে বক উড়চে । কাচি কাটা পুল পায় হয়ে খানিকট এসেই একটা লোকের সঙ্গে আলাপ হ’ল । তার বয়েস যাট বাষট্টি হবে, রংটা বেজায় কালো, হাতে একটা পোর্টুলা, কাধে ছাতি। আমি বসুম—কোথায় যাবে ছে? সে বল্লে—আজ্ঞে দাদা বাবু, ঘাড়াপোতা ঠাকুরতলা যাবো । বাড়ী শাস্তিপুর গোসাই পাড়া । - লোকটা বল্লে—একটা বিড়ি থান দাদাবাবু। বেশ লোকটা ! ও রকম লেকি আমার ভাল লাগে | সহজ সরল মাতুম্ব, এমন সব কথা বলে ঘ, আমি সাধারণতঃ শুনিনে । সুন্দর পুরে আসতে প্রমথ ঘোষ সাইকেলে চেপে কোথায় যাচ্ছে দেখলুম। আমি আর আমার সঙ্গী দু’জনে মোল্লাহাটির খেয়াঘাটে পার হই। সুন্দর মেঘাচ্ছন্ন সকাল বেলা নদীজল শাস্ত, ওখানে সবুজ কষাড় বন । খেয়া পার হয়ে কেউটে পাড়া, মুড়িঘাট ছাড়িয়ে আমরা গোবরাপুর এল। আর বছর বাজারের যে দোকানে তামাক খেয়েছিলাম, সেখানে আমরা তামাক খাবার জন্তে বসতে গিয়ে দেখি গোবরাপুরের জজ বাবুর সেজ ছেলে মল্লনাথ বসে আছে। সে আমাকে দেখে টানাটানি করতে লাগলো তাদেব বাড়ী নিয়ে যাবার জন্তে । অন্ততঃ চা থেয়েও যেন যাই। তার দ্বাদ রামকৃষ্ণু মিশনের সন্ন্যাসী, অনেকদিন পরে বাড়ী এসেচেন তার সঙ্গে দেখা করতেই হবে, তিনি নাকি আমার বই-এর খুব অনুরাগী ইত্যাদি বলে বাড়ী নিয়ে গেল। আমার সঙ্গীকেও সে নিমন্ত্রণ করলে। ওদের মস্ত বড় বাড়ী, আর কত যে ছেলে মেয়ে! সব ভাইগুলি বড় চাকুরী করে বিদেশে এবর্ণব বাদীrন ওদের সনালী ভাষ্ট এসে রামকৃষ্ণ উৎসব করচেন