পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

48 উৰ্ম্মিমুখর 粤 লোকেদের মধ্যে বেছে বেছে এক কাৰ্য্যকরী সমিতি গঠন করি। নুর মহম্মদ মাষ্টারের আগ্রহেই এসব ছোল। সে লোকটা নি:স্বার্থ সেবাপরায়ণ, গ্রামে গ্রামে ঘুরে লোক যোগাড় করা, সকলকে খবর দেওয়া, এসব সে-ই করেচে। মিটিং-এর পরে বৈকালে নীল আকাশের বিচিত্রবর্ণ মেঘস্ত,পের তলে মরগাঙের ধারে সবুজ ঘাসভরা মাঠের মধ্যে বসে গ্রামের লোক কত দুঃখের কথা আমার কাছে বলতে লাগলো। গায়ে জলের কষ্ট, কচুরিপানায় পচা জল খাচ্ছে, বেলে জমিতে ফসল হয় না, ক’বছর অজন্মা, মোল্লাহাটির খেয়াঘাটের ঘটওয়ালাদের জুলুম। তাদের বুঝিয়ে দিলাম, এই পল্লীমঙ্গল সমিতি থেকে গ্রামে এসব অভাব অভিযোগ দূর করবার চেষ্টা করা হবে । তোমরা চাইতে জানো না, তাই পাও না। অন্ত গ্রয়ে দু'টাে টিউবওয়েল হয় দু’পাড়ায় তোমাদের গোটা গায়ে একটাও হয় না। সন্ধ্যার আগে যেখান থেকে রওনা হলুম যখন, তখন মাথায় সেই উজ্জল তারাট উঠেচে। বাড়ী এসেই উষার পত্র পেলুম। ছুটী শেষ হয়ে আসচে আর আমার মন খারাপ হয়ে আসচে। এই মুক্ত নদীর চর, নীল উদার আকাশ, বর্ষাঙ্গাম তৃণভূমি, আষাঢ়ের টলটলে কালে জল ইছামতী, জোনাকীর বর্ণক, বে। কথা-ক’ পাপীর ডাক, এসব ছেড়ে যেতে কষ্ট হয় । জীবনের বেগ যেন মন্দীভূত না হয়। আমাদের দেশে, আমাদের জাতীয় জীবনে তার আশঙ্কা খুব বেশী। পেট্রার্ক সম্বন্ধে যেমন উক্ত চে– 'It is a noble Florentine profile, the whole aspect ' ,gesting abundance of thought and life...” আমাদের দেশে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কার সম্বন্ধে সে কথা বলা যায় ? রাত্রে মনু রায়ের বাড়ীতে সামাজিক দলাদলির মিটিং হোল রাত একটা পৰ্য্যন্ত। গায়ের সবাই ছিল, কিছুতেই আর মেটে না । নানা কথা ওঠে, এ রাগ করে চলে যায়, ও রাগ করে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত কিছুই মীমাংসা হোল না। আমায় দু'বার ডাকতে এল, আমি যাইনি। সারাদিন বর্ষার বৃষ্টি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, পথে ঘাটে জল বেধেচে ।