করিতেছে, তাহারা তোমার সন্তান নহে; তাহারা তোমার শবলোলুপ, রক্ত-পিপাসু পিশাচ। তোমার সন্তান বা সকলে চলিয়া গিয়াছে।
হতভাগ্য হিন্দু! তোমার এ বরাহ বিবাদ আর ঘুচিল না; তোমার অপমানের কলঙ্কের মূল এ অন্তর্দাহ আর ঘুচিল না; তোমার সোণার গৃহে কালসাপ, কুসুমে কীট, এ ব্যাধি আর ঘুচিল না! তোমার প্রাণের কলুষ, জ্ঞানের হলাহল, বুকের চাপা এ বিবাদ আর ঘুচিল না।
আজ এ জাতির যা কিছু জীৰন—‘একঘরে’ করার ব্যগ্রতাতে পরিলক্ষিত, আর অন্যদিকে উত্থানশক্তিহীন। যে বরাহ-বিবাদ পূর্ব্বে রাজায় রাজায় ছিল, তাহা আজ ভ্রাতায় ভ্রাতায় পরিণত হইয়াছে; সেই চিরশত্রু হিন্দুর রক্তপায়ী প্রেতাত্মা আজ হিন্দুর ঘরে ঘরে ঘুরিতেছে।
হিন্দুসমাজ পচিতেছে—
পৃথিবীর লজ্জা, মনুষ্যজাতির আবর্জ্জনা, প্রতাড়িত পদাহত হিন্দুসমাজ—আজ পচিতেছে।
জীর্ণ, শীর্ণ, ভাঁড় হিন্দুসমাজ আজ পচিতেছে।
শঠতার ভাণ্ডার, মিথ্যাকথার ওস্তাদ, লুকোচুরীর সর্দ্দার, ভীরুতার সেনাপতি, হিন্দুসমাজ আজ পচিতেছে—
এ মিথ্যা, এ প্রতারণা, এ ভাঁড়ামি, এ নির্ম্মমতা, এ নির্ব্বিবেকতা সে পচার দুৰ্গন্ধ ও দূষিত বায়ু।
কেন আর এ ভাঙ্গা ঘরে মারিস তোদের সিঁধকাটি।
ছিন্ন তরুর মূলে হ’তে কেন তুলে দিস্ মাটি।
বিষে জ্বর জ্বর প্রাণে কেন হানি’স্, বিষবাণ,
পাপের বন্যায়ভরা দেশে আনিস্ নরক খাল কাটি,
কেন শীর্ণ মলিন দুঃখে, মারিস কুঠার মায়ের বুকে।
দু’দিন গেলে দিস্রে ফেলে, পুরাস প্রাণের আকাঙ্ক্ষাটি।