“একঘরে।”'
মহাশয়!
আমরা দীনহীন কাঙ্গাল মূৰ্খ বিলেত-ফেরত; আমাদিগকে কেন প্রাণে মারেন? আপনারা দেশের অহঙ্কার, আপনারা জাতির জ্যোতি, আপনার বিদ্যার প্রতিনিধি, আপনারা জ্ঞানের উৎস, আপনারা সত্যের নায়ক, আপনার সাহসের প্রতিমূর্ত্তি। আমরা আপনাদের নিষ্কলঙ্কচরণে পড়িতেছি; প্রাণে মারিবেন না।
আমরা—অন্ততঃ আমি যখন বিলাতে গিয়াছিলাম, তখনই বোধ হইয়াছিল কাজটা বড় ভাল হইতেছে না। ভাবিয়াছিলাম যে এ বিজ্ঞানের, উৎসাহের, বীর্য্যের, স্বাধীনতার রঙ্গভূমি ভারতবর্ষ ছাড়িয়া কোথায় এক ভীরুতার আলয়, মূৰ্খতার চণ্ডীমণ্ডপ—বিলেতে যাইতেছি,—একাজটা বড় ভাল হইতেছে না। একবার মনেও হইল, বুঝি অধর্ম্মের, অজ্ঞানের, অমোচ্য কলঙ্কের, অনন্ত নিরয়ের বীজ বপন করিতেছি। কিন্তু কি করিব—মুগ্ধ মানবের মন বিবেকের বাধা শুনিল না। জাহাজে চড়িলাম, প্যাণ্ট্ পরিলাম, কট্লেট খাইলাম, তাহার পর দেখুন এই বিপদ।—জাহাজটা যখন গভীরগর্জ্জনময় সাগরের নীলিমায় গিয়া পড়িল, তখনই বেশ বুঝিতে পারিলাম যে কাজটা বড় খারাপ হইয়া গেল। কিন্তু তখন ফিরিয়া আসি কিরূপে? কি করিব, বিলাতে যাইলাম, ইংরাজের সহিত মিশিলাম, রোষ্টচপ খাইলাম। এখন পস্তাচ্চি। সমস্ত দোষ স্বীকার করিতেছি, মস্তক অবনত করিতেছি;—প্রাণে মারিবেন না।