পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।
right

আমার আয়ত্তাধীন”—ইহাই জীবনের প্রধান কাজ। আমি ভালকে কোথায় অন্বেষণ করিব, আর মন্দকেই বা কোথায় অন্বেষণ করিব?— আমার অন্তরে;—আমার যাহা নিজস্ব তাহাতেই। কিন্তু যাহা কিছু তােমার নিজস্ব নহে, তাহাকে ভালও বলিবে না, মন্দ‌ ও বলিবে না, ইষ্টজনকও বলিবে না, অনিষ্টজনকও বলিবে না, তৎসম্বন্ধে ওরূপ কোন শব্দই প্রয়ােগ করিবে না।

 ৩। তবে কি এই সকল বিষয়ে অযত্নশীল ও অসাবধান হইব? কোন প্রকারেই নহে। উহাও একপ্রকার ইচ্ছাশক্তিগত পাপ, সুতরাং প্রকৃতির বিরুদ্ধ। সাবধান ও যত্নশীল হইবে, কেন না, বাহ্য বস্তুর প্রয়ােগ উপেক্ষার বিষয় নহে; কিন্তু সেই সঙ্গে অবিচলিত ও শান্ত থাকিবে, কেন না, বাহ্য বস্তু স্বয়ং উপেক্ষার বিষয়। আমার সহিত যাহার প্রকৃত সম্পর্ক, সে বিষয়ে আমাকে কেহ বাধা দিতে কিম্বা বাধ্য করিতে পারিবে না। কিন্তু যে সকল বস্তুর দ্বারা আমি বাধিত ও বাধ্য হইয়া থাকি, যাহার সম্প্রাপ্তি আমার সাধ্যায়ত্ত নহে, তাহা ভালও নহে, মন্দও নহে। কিন্তু সেই সকল বস্তুর প্রয়ােগেই ভাল মন্দ নির্ভর করে, এবং তাহাই আমার আয়ত্তাধীন। বিষয়ানুরাগীর যত্নশীলতা ও বিষয়-বিরাগীর অবিচলতা—এই দুয়ের সন্মিশ্রণ ও সমন্বয় সাধন বড়ই কঠিন সন্দেহ নাই; কিন্তু তাই বলিয়া অসাধ্য কিম্বা অসম্ভব নহে; যদি ইহা অসম্ভব হয়, তাহা হইলে মানুষের পক্ষে সুখী হওয়াও অসম্ভব।

 ৪। আমাকে এমন একটি লােক দেখাও, কোন-একটা কাজ কিরূপ ভাবে করিতে হইবে শুধু তাহারই প্রতি যাহার দৃষ্টি; যে ব্যক্তি কোন বস্তু প্রাপ্তির জন্য লালায়িত নহে, পরন্তু স্বীয় ইচ্ছাশক্তি প্রয়ােগ করিবার জন্যই উৎসুক।