পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভয় ও অভয়।
২৭

যাহা অনিবার্য্য—যাহা দুরতিক্রম্য, তাহা আমাদের পক্ষে ভালও নহে, মন্দও নহে”। এই কথাটি যদি সত্য হয়, তাহা হইলে যদি কোন তত্ত্বজ্ঞানী বলেন;—“যে সকল বিষয় আমাদের ইচ্ছাধীন নহে, সেই সকল বিষয়ে নির্ভীক হইবে এবং যে সকল বিষয় আমাদের ইচ্ছাধীন, সেই সকল বিষয়েই ভয় করিবে”—এই কথায় অসঙ্গতি কি আছে? যদি মন্দ ইচ্ছার উপরেই আমাদের মন্দ নির্ভর করে, তাহা হইতে শুধু সেই বিষয়েই আমাদের ভীত হওয়া উচিত; এবং যাহা আমাদিগের ইচ্ছাধীন ও সাধ্যায়ত্ত নহে, সেই বিষয়েই আমাদিগের নির্ভীক হওয়া কর্ত্তব্য। শুধু তাহা নহে, এই স্থলে আমরা ভয়ের ভাব হইতেই সাহস অর্জ্জন করিয়া থাকি; যাহা বাস্তবিক মন্দ তাহা করিতে আমরা ভয় পাই বলিয়াই যাহা মন্দ নহে তাহাতে আমরা নির্ভয় হই।

 ২। আমরা কিন্তু ইহার বিপরীতে, হরিণের ন্যায় অনর্থক ত্রস্ত হইয়া বিপদগ্রাসে পতিত হই। হরিণেরা যখন ভয় পায় এবং ভয় পাইয়া পলাইবার চেষ্টা করে, তখন তাহারা নিরাপদ স্থান মনে করিয়া কোথায় গিয়া আশ্রয় গ্রহণ করে?—ব্যাধ যে জাল পাতিয়া রাখিয়াছে সেই জালের মধ্যে। এইরূপেই তাহারা মৃত্যুগ্রাসে পতিত হয়। কারণ, তাহারা জানে না,— কোন্ স্থলে ভয় করিতে হয়, কোন স্থলে নির্ভয় হইতে হয়। আমরা না বুঝিয়া সচরাচর কোন্ বিষয়ে ভয় পাইয়া থাকি?—না, যে বিষয়টি আমাদের ইচ্ছা-শক্তির অতীত। আর বিপদের সম্ভাবনা নাই মনে করিয়া কোন্ বিষয়ে আমরা নির্ভয় হই?—না, যে বিষয় আমাদের ইচ্ছার অধীন। কোন প্রলোভনে মুগ্ধ ও বিড়ম্বিত হওয়া, কোন অবিবেচনার কাজ কিম্বা লজ্জাজনক গর্হিত কাজ করা, অথবা নীচ লোভের বশবর্ত্তী হইয়া কোন বস্তুর অনুসরণ করা—এ সমস্ত প্রকৃত ভয়ের বিষয় কি না সে-পক্ষে আমরা