পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যেমনটি তাই।
৩১

অঙ্কিত করিবে; সেখানকার জনতা, ঠ্যালাঠেলি, মারামারি, চুরিচামারি ইত্যাদি সমস্ত পূর্ব্ব হইতেই কল্পনা করিয়া দেখিবে। তাহা হইলে আরও নির্ভয়ে, নিশ্চিন্ত মনে সে কাজে প্রবৃত্ত হইতে সমর্থ হইবে; তখন তুমি স্পষ্ট বলিতে পারিবে “আমি তীর্থে স্নান করিতে চাই, এবং প্রকৃতির অনুবর্ত্তী হইয়াই আমার সেই সঙ্কল্প আমি সিদ্ধ করিব।” আমাদের প্রত্যেক কার্য্য সম্বন্ধেই এই কথা খাটে। কেন না, যদি তোমার তীর্থস্নানের সময় কোনও বাধাবিঘ্ন উপস্থিত হয়, তাহা হইলে তখনি তুমি এই কথাটি মনে করিবে তীর্থ-স্নানই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল না; পরন্তু প্রকৃতির অনুবর্ত্তী হইয়া আমার সেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ করিব, ইহাই আমার অভিপ্রায় ছিল। কিন্তু সেখানকার ঘটনাদি দেখিয়া যদি আমি ক্রুদ্ধ হই, তাহা হইলে আমার সে সঙ্কল্প সিদ্ধ করিতে পারিব না।”

 ২। ইতর ব্যক্তি ও তত্ত্বজ্ঞানীর মধ্যে প্রথম প্রভেদটি এই, ইতর ব্যক্তি এইরূপ বলিয়া থাকে “হায় হায়! আমার সন্তানের, আমার ভ্রাতার, আমার, পিতার সর্ব্বনাশ হইল”! তত্ত্বজ্ঞানীকে যদি কখনও বাধ্য হইয়া বলিতে হয়—“হায় হায়!”—তখনই আত্মসম্বরণ করিয়া কথাটা এইরূপে শেষ করেন—“আমার আত্মার সর্ব্বনাশ হইল।” ইচ্ছাশক্তিমান আত্মাকে আর কেহই বাধা দিতে পারে না, কিম্বা তাহার অনিষ্ট আর কেহই করিতে পারে না—আত্মাই আত্মার বাধা ও শত্রু। অতএব,কষ্টের সময় যদি আপনাকেই আমি দোষী করি, আর এই কথাটি মনে রাখি যে, আমাদের মনের সংস্কারই আমাদের কষ্ট ও উদ্বেগের একমাত্র কারণ, তাহা হইলে জানিবে আমরা কতকটা সাধন-পথে অগ্রসর হইয়াছি। কিন্তু এখন যেরূপ দেখিতে পাই, আমরা আরম্ভ হইতেই, ভিন্ন পথ দিয়া যাত্রা করিয়াছি। শৈশবাবস্থায় অন্যমনস্ক হইয়া হাঁ করিয়া চলিতে চলিতে কোন প্রস্তরে ঠেকিয়া যদি আমাদের কখন পদস্খলন হইত