পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের মধ্যে ঈশ্বর।
৪৭

মধ্যেও আছে। কিন্তু তাহা তুমি কখনই বলিবে না। আর তোমার কথাই ঠিক্। কেননা, যদিও তাহারা সর্ব্বতোভাবে ইন্দ্রিয়-প্রতীতি অনুসারে চলিতে পারে, কিন্তু উহার ফলাফল পর্য্যবেক্ষণ ও বিচার করিতে তাহারা অসমর্থ। এবং ইহাই তাহাদের পক্ষে স্বাভাবিক। তাহারা অপরের সেবার জন্যই রহিয়াছে। তাহাদের নিজের কোন মহৎ উদ্দেশ্য নাই। গর্দ্দভ-জীবনের পরম উদ্দেশ্য কি? পরের ভার বহন করাই তাহাদের একমাত্র কাজ। পরের প্রয়োজনের জন্যই তাহাদের পথ চলিতে হয়। এবং সেই জন্যই সে, ইন্দ্রিয়-প্রতীতি-অনুসারে কাজ করিবার শক্তি পাইয়াছে। তা না হইলে, সে চলিতে পারিত না। কিন্তু তাহার এই পর্য্যন্তই শেষ। কেননা, সেই সঙ্গে ইন্দ্রিয়-প্রতীতির প্রয়োগ সম্বন্ধও যদি তাহার পর্য্যবেক্ষণশক্তি ও বিচারশক্তি থাকিত, তাহা হইলে ন্যায্যতঃ সে আর আমাদের অধীন হইত না, আমাদের সেবায় নিযুক্ত হইত না; তাহা হইলে সে আমাদের সমতুল্য হইত আমাদের সদৃশ হইত।

 ৩। কেননা, ব্যবহার এক কথা, এবং পর্য্যবেক্ষণ ও অনুশীলন আর এক কথা। ইতর জীবেরা শুধু ইন্দ্রিয়-প্রতীতি অনুসারেই কাজ করিবে, কিন্তু আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় প্রতীতিগুলিকে পর্য্যবেক্ষণ করিব —অনুশীলন করিব, ইহাই ঈশ্বরের অভিপ্রায়। এই জন্য আহার নিদ্রা মৈথুন— এই সকল কাজই তাহাদের পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু ঈশ্বর আমাদিগকে পর্য্যবেক্ষণ ও অনুশীলনের শক্তি দিয়াছেন, তাই আমাদের পক্ষে উহা যথেষ্ট নহে। কিন্তু আমরা যদি কোন একটা বিশেষ অনুশাসন ও নিয়ম-অনুসারে বাহ্য প্রকৃতি ও মানব-প্রকৃতির সহিত মিল না রাখিয়া চলি, তাহা হইলে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য সাধনে আমরা কখনই সমর্থ হইব না। কেননা, যেখানে দৈহিক প্রকৃতি বিভিন্ন, সেখানে