পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের মধ্যে ঈশ্বর।
৪৯

আসিয়াছ? যখন তুমি অন্নভোজন কর তখন কি তোমার স্মরণ হয় না, কে অন্ন ভোজন করিতেছে?—ভোজন করিয়া কাহাকে তুমি পোষণ করিতেছ? কথায় বার্ত্তায়, আহারে বিহারে, কাজে কর্ম্মে, তুমি যে একটি খণ্ড-ঈশ্বরকে পোষণ করিতেছ,—পরিচালিত করিতেছ, তাহা কি তুমি জান না? হতভাগ্য মনুষ্য! একটি খণ্ড-ঈশ্বরকে তোমার অভ্যন্তরে ধারণ করিয়া, তোমার সঙ্গে সঙ্গে সর্ব্বত্র লইয়া বেড়াইতেছ;—তুমি তাহা জান না! তুমি কি মনে করিতেছ, আমি কোন স্বর্ণময়, রজতময় ঈশ্বরের কথা বলিতেছি যাহা তোমার বাহিরে অবস্থিত? না, তাহা নহে। তোমার অন্তরেই তুমি তাঁহাকে বহন করিতেছ। অতএব দেখিও যেন তোমার কোন অপবিত্র চিন্তা—কোন জঘন্য কার্য্য তাঁহার সিংহাসনকে কলুষিত না করে। তুমি এখন যাহা করিতেছ ঈশ্বরের কোন প্রতিমূর্ত্তির নিকটেও তুমি তাহা করিতে সাহসী হইতে না। কিন্তু তোমার অন্তরে ঈশ্বর স্বয়ং অধিষ্ঠিত। তিনি সমস্তই দেখিতেছেন, সমস্তই শুনিতেছেন। তাঁহার সমক্ষে তুমি এই সকল চিন্তা বা এই সকল কার্য্য করিতে লজ্জিত হইতেছ না? হে আত্মপ্রকৃতি-অনভিজ্ঞ মনুষ্য সাবধান! ঈশ্বরের রুদ্রমূর্ত্তি যেন তোমায় দেখিতে না হয়।

 ৫। কেন তবে আমরা যুবকদিগকে বিদ্যালয় হইতে জীবনের কার্য্যক্ষেত্রে পাঠাইতে এত ভয় করি? পাছে তাহারা কোন অন্যায় কাজ করে, বিলাসী ও লম্পট হয়, চীরবস্ত্র পরিধানে হীনতা মনে করে, চারু পরিচ্ছদ ধারণে উদ্ধত হইয়া উঠে,—এইরূপ আমাদের নানা আশঙ্কা হইয়া থাকে। যে এরূপ ভয় করে, সে আপনার ঈশ্বরকে জানে না; জানে না, কাহার সঙ্গে সে যাইতেছে। যদি কেহ আমাকে বলে — “গুরুদেব! তুমি যদি আমার সঙ্গে থাকিতে, তাহা হইলে কোন ভয় হইত না।” এইরূপ কথায় আমার ধৈর্য্যচ্যুতি হয়। কেন হে বাপু!