পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজশক্তি ও আত্মবল।
৭১

 আমার ইচ্ছা হইলেও আমি প্রবেশ করিব না। কেন না, আমার ইচ্ছা অপেক্ষা ঈশ্বরের ইচ্ছাই আমার নিকট বলবতী। আমি তাঁহারই অনুগত ভৃত্য ও অনুচর; তাঁহার যাহা ইচ্ছা আমারও তাই ইচ্ছা, তিনি যে পথে যাইতে বলিবেন আমি সেই পথেই চলিব। আমাকে কেহ বহিষ্কৃত করিতে পারে না; যাহারা জোর করিয়া প্রবেশ করিতে যায় তাহারাই বহিষ্কৃত হয়। আমি প্রবেশ করিতে চাই না কেন? কারণ আমি জানি, যাহারা রাজদ্বারে প্রবেশ করে তাহারা ভাল জিনিস কিছুই পায় না। কিন্তু সীজার অমুক ব্যক্তিকে সম্মানিত করিয়াছেন বলিয়া আমি যখন কাহাকে তাহার প্রতি অভিনন্দন প্রকাশ করিতে শুনি, আমি তখন তাহাকে জিজ্ঞাসা করি, তোমার ভাগ্যে কি লাভ হইল? কোন দেশের শাসনভার?—আচ্ছা সেই সঙ্গে কি তুমি ন্যায়পরতা সম্বন্ধেও কিছু শিক্ষা পাইয়াছ? ম্যাজিষ্ট্রেটের কাজ?—সেই সঙ্গে ভাল ম্যাজিষ্ট্রেট হইবার শক্তি কি কিছু অর্জ্জন করিয়াছ? তবে আর কি হইল? এক ব্যক্তি শুধু কতকগুলা চিনির বাতাস লইয়া বাহিরে ছড়াইয়া দিতেছে; শিশুগণ তাহাই লইবার জন্য আপনাদের মধ্যে কাড়াকাড়ি করিতেছে। কিন্তু পূর্ণবয়স্ক পুরুষেরা তাহার জন্য লালায়িত হইতে পারে না;—তাহারা এই সমস্তকে তুচ্ছজ্ঞান করে। সরকারী চাকরী বিতরণ করা হইতেছে—শিশুরা তাহার অন্বেষণ করুক; অর্থ বিতরণ করা হইতেছে—শিশুরা তাহার জন্য কাড়াকাড়ি করুক। তাহারা রাজদ্বার হইতে তাড়িত হইতেছে—মার খাইতেছে, তথাপি যে-হাতের মার খাইতেছে, সেই হাতই আবার তাহারা চুম্বন করিতেছে; কিন্তু আমার নিকট রাজার এই সব দান তুচ্ছ হইতেও তুচ্ছ।