মাথায় ছাই মাখলো, সারা মুখ কালি দিয়ে কালো করলো। আটদিন আটরাত ধরে সেই মৃতদেহকে ঘিরে তারা কেঁদে কেঁদে নাচলো, শোকে আছড়ে আছড়ে পড়লো, সারা গা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেল।
তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পাঁচখানা গাঁয়ের লোক ধীরে সৎকারের শেষ মন্ত্র গেয়ে চললো,···
“বাবা, তুমিই আজ সত্যিকারের সুখী।
দুঃখী আমরা, যারা পড়ে রইলাম,
যারা তোমার জন্যে শোক করছি।”
জীবনের একঘেয়ে বিষাদের ছন্দকে ভাঙ্গবার জন্যে যদি পাল-পার্বণের ব্যবস্থা না থাকতো, কে চাইতো বেঁচে থাকতে? নিচ্ছিদ্র দুঃখের মধ্যে এই সব পুরানো রীতি-নীতি তাই বাঁচিয়ে রেখেছিল প্রাণের আগুনকে, বৈচিত্রকে।
তা না হলে, যে মরে গেল, তার দিকে চেয়ে দেখবার আর কি আছে? তার কাছে চাইবার বা আশা করবার আর কিছুই নাই। মানুষের সঙ্গে তার সব সম্পর্ক গিয়েছে ছিড়ে, কি আর আছে তার মূল্য? আজ আর তো সে সমাজের কেউ নয়! “একটা শুকনো পাতার মতন, শুকনো এক টুকরো হাড়ের মতন, নিস্প্রয়োজন, নিরর্থক।
কিন্তু আবহমানকাল থেকে চলে আসছে, এই পৃথিবী ছেড়ে যে-যাত্রী চল্লো নাঙ্গাকৌরার দেশের দিকে, তার যাত্রাপথের
৯৫