পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (চতুর্থ বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটি নৃশংস হত্যা । RV) মুৎসুদী চেহেলসেতুনের নিকট মুন্সীখানায় অবস্থিতি করিতেছিলেন। কিছু দূরে এনায়েৎ ভাইজান নামক একজন.প্রধান ভৃত্য কৌতুক দেখিবার জন্য দণ্ডায়মান থাকে। আফগানের নিকটবৰ্ত্তী হইলে প্ৰথমতঃ বক্সী বোয়ালিয়া প্ৰায় সহস্ৰ আফগানের সহিত উপস্থিত হইয়া দূর হইতে শাসনকৰ্ত্তাকে যথাযোগ্য সম্মান প্ৰদৰ্শন করিল । উক্ত আফগানদিগের বন্দুকাদি সমস্ত বারুদ ও গুলি পরিপূর্ণ ছিল। আফগানগণ ভিত্তির একপার্থে দণ্ডায়মান হইলে বক্সী বোয়ালিয়া কতিপয় ব্যক্তির সহিত অগ্রসর হইয়া জৈনুদ্দীনকে কুনিশা করিয়া আপনার নজর প্রদান করিল। তাহার পর পাপিষ্ঠ মোরাদি সের পঞ্চাশত আফগানের সহিত গৃহমধ্যে প্ৰবেশ করিল। তাহারা সকলেই সশস্ত্র এবং ঘনকার্পাসপূর্ণ অঙ্গত্ৰাণে ভূষিত। তাহারা দূর হইতে সন্মান প্ৰদৰ্শন করিলে, মোরাদি সেরও কতিপয় প্রধান কৰ্ম্মচারীর সহিত অগ্রসর হইয়া কুনিশা করিয়া নজর প্রদান করিল। এই সময়ে শাসনকৰ্ত্তা, সমসের খাঁর কথা জিজ্ঞাসা করিলে, তাহারা উত্তর দিল যে, তিনি অবিলম্বেই আগমন করিবেন। তাহার অব্যবহিত পরেই সমসের খাঁ কোতোয়ালের চবুতরার নিকট শিবিকা হইতে অবতরণ করিয়া গৃহ মধ্যে প্রবিষ্ট হইল। তাহার সহিত প্ৰায় তিন চারি সহস্ৰ দুৰ্দান্ত আফগান ছিল । তাহারা গৃহ হইতে রাজপথ পৰ্য্যন্ত অধিকার করিয়া রহিল। মোরাদি সের সকলকে পৃথক করিয়া নবাগতদিগের জন্য পথ পরিষ্কার করিতে লাগিল । জৈনুদ্দীন তাহাদিগের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শনের জন্য স্বহস্তে তাম্বল বিতরণ করিতে লাগিলেন । কতিপয় লোকে গ্ৰহণ করিলে পর আবদুল রসীদ খা নামক এক ব্যক্তির সময় উপস্থিত হইল। ষড়যন্ত্রকারীদিগের মধ্যে এইরূপ স্থিরীকৃত হইয়াছিল। যে, এই ব্যক্তিই প্রথমত: জৈনুদ্দীনকে আঘাত করিবে। তাম্বল গ্রহণের সময় আবদুল রাসীদের হস্ত কম্পিত হওয়ায় তাম্বলটী তাহার হস্তচু্যত হইয়া ভূতলে পতিত হয়। পতনকালে জৈনুদ্দীন ঈষৎ হাস্ত করিয়া তাহাকে বলিলেন, দেখিতেছি যে, এ তাম্বলটী তোমার অদূদ্ষ্টে নাই।