পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (চতুর্থ বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐতিহাসিক চিত্ৰ । নিশ্চিন্ত মনে অতিবাহিত করিলেন । প্ৰভাতে উঠিয়া দেখিলেন মহারাষ্ট্ৰীয়গণ তাহাদিগকে চতুদিকে বেষ্টন করিয়া ফেলিয়াছে । নবাব পরামর্শ করিয়৷ ষ্টির করিলেন, যে কোন প্রকারে হউক, শী পক্ষের বুহি ভেদ করিয়া মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হইতে পারলে আ । নূতন সজ্জায় ও নূতন উৎসাহে তাহাদিগকে আক্রমণ করা যাইকে এইরূপে পরামর্শ করিতে করিতে সে দিন অতিবাহিত হইয়া সন্ধ্যা উপ স্থিত হয়। মহারাষ্ট্ৰীয়েরা নবাব শিবির হইতে একটি কামান অধিকাৰ করিয়াছিল। এক্ষণে একটি বৃক্ষের উপর উক্ত কামান স্থাপন করিয়া নবাব-সৈন্যের উপর গোলাবৃষ্টি আরম্ভ করিল। সঙ্গে সঙ্গে অগণ্য বন্দুকও চালিত হইতে লাগিল। চারদিকে সৈন্যগণের হাহাকারে দিয়ে গুল বিদীর্ণ হইবার উপক্ৰম হইল। বদ্ধমানরাজার দেওয়ান মাণিক চাদ ভীত হইয়া প্ৰভাত হইলে স্বীয় প্রভুর নিকট পলায়ন করার চেষ্টা দেখিতে লাগিলেন। সেই সময় গভীর রাজনীযোগে দুৰ্দান্ত মহারাষ্ট্ৰীয়গণ, ভীমবেগে নবাব-সৈন্যের উপর চতুদিক হইতে নপতিত হইল। নবাব আলিবর্দী খাঁ সহসা এইরূপে আক্রান্ত হইয়া স্বীয় সৈন্যের বুহি রচনার অবকাশ পাইলেন না। এমন কি তিনি নিজে হস্তিপৃষ্ঠে আরোহণেরও সময় পান নাই। যে যেরূপে পারিল, আত্মরক্ষার জন্য সচেষ্ট হইল। ফলতঃ নবাব সৈন্যগণ অত্যন্ত বিশৃঙ্খলার সহিত যুদ্ধ করিতে লাগিল। মীর হাবীব তিন স্থানে আহভ হইয়া শত্রুপক্ষের হস্তে বন্দী হন। তাহার পর তিনি মহারাষ্ট্রীয়দিগের কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইয়াছিলেন। নবাবের গোলন্দাজ সেনাপতি হায়দার আলি খাঁ যদিও শত্রুপক্ষকে ধরাশায়ী করিতেছিলেন, তথাপি সেই অগণ্য পঙ্গপালে। কিছুই করিয়া উঠিতে পারেন নাই। এদিকে মুস্তাফা খা, সমসের খা সর্দার খা, ওমার খাঁ, রহিম খাঁ, প্ৰভৃতি প্ৰধান প্ৰধান সেনানীগণ প্ৰথা মতঃ বিশৃঙ্খল ও বিক্ষিপ্ত ভাবে যুদ্ধ করিতেছিলেন। অবশেষে সকলে, দলবদ্ধ হইয়া চক্রাকারে মহারাষ্ট্ৰীয়দিগের পার্শ্ব আক্রমণ করিলেন।