পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতারামের ধৰ্ম্ম প্ৰাণত । y O. G. সৃষ্টিসাধনের জন্যই তিনি কানাইনগরে হরেকৃষ্ণ বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত স্থানের শীলোৎকীর্ণ “কৃষ্ণতোষাভিলাষঃ”—কথা হইতে ইহা বুঝা যাইতেছে। কেবল গুরুদেবের প্রতি নহে, সমস্ত ব্ৰাহ্মণের প্রতি তাহার প্রবল ভক্তি ছিল। সীতারামের মৃত্যুর পরও বহুদিন পৰ্য্যন্ত মহম্মদপুর একটি অতি সমৃদ্ধ ও লোকবহুল জনপদ ছিল। যশোহর জেলার মধ্যে ইহা এক সময়ে সৰ্ব্বপ্রধান স্থান বলিয়া বিবেচিত হইত। সরকারী রিপোর্ট হইতে জানা যায় যে এক সময়ে যশোহর জেলার কেন্দ্ৰস্থলটি স্থানান্তরিত করিয়া মহম্মদপুরে প্রতিষ্ঠিত করিবার প্রস্তাব হইয়াছিল। কিন্তু সে প্ৰস্তাব কাৰ্য্যে পরিণত হয় নাই । ১২৪৪ সালে মহম্মদপুরে এক ভীষণ মড়ক হয়। একটি আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, বঙ্গদেশ কলেরা ও ম্যালেরিয়া নামক যে দুই ভীষণ ব্যাধির যন্ত্রণায় অস্থির হইয়া পড়িয়াছে তাহদের উভয়ের জন্মস্থান যশোহর জেলায় । ১৮২৫ খৃষ্টাব্দে নলডাঙ্গায় কলেরা প্ৰথম দেখা দেয় এবং ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে মহম্মদপুরে ম্যালেরিয়া । উদ্ভূত হয়। এই ভীষণ ম্যালেরিয়া মড়কে মহম্মদপুর উৎসন্ন হইয়া গিয়াছিল। বৰ্ত্তমান মহম্মদপুর যে ব্যান্ত্রবরাহ সেবিত ভীষণ জঙ্গলে আবৃত হইয়া পড়িয়া আছে, তাহার কারণ এই মড়ক । মহম্মদপুরের যখন সুদিন ছিল, তখন সেই স্থান ও নিকটবৰ্ত্তী বহুজনপদের ব্রাহ্মণ কায়স্থ প্ৰভৃতি উচ্চজাতি লইয়া “রাজসমাজ” নামক একটি সমাজ গঠিত হইয়াছিল। আজিও রাজ-সমাজ নাম আছে ; কিন্তু তাহার অন্তর্গত অধিবাসীর সংখ্যা ৩০|৩২ ঘর মাত্র । এই রাজ-সমাজের অন্তর্গত বহুসংখ্যক ব্ৰাহ্মণগণ সকলেই রাজা সীতারামের নিকট হইতে নিষ্কর ব্রহ্মোত্তর প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এখনও র্যাহারা আছেন, তঁাহারা সকলেই সেই পূৰ্ব্ব সম্পত্তির উত্তরাধিকার সন্ত্যোগ করিতেছেন। অসংখ্য ব্ৰাহ্মণকে ভূমি বৃত্তিদান সীতারামের পুণ্যকীৰ্ত্তি সমূহের অন্যতম। সীতারাম কখনও কোন ব্রাহ্মণের প্রতি অত্যাচার বা ব্ৰাহ্মণকে তির স্কার করিতেন না। ব্ৰাহ্মণের বাক্য তিনি সৰ্ব্বদা শিরোধাৰ্য্য করিতেন। কেহ । কখনও সীতারামের কোপানলে পড়িলে, সে যদি জনৈক ব্ৰাহ্মণকে সম্মুখে ?"ו,