পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



জাতীয় ইতিহাস চর্চ্চার ফল।


 আমরা অতি প্রাচীন জাতি। কিন্তু পৃথিবীর অপরাপর জাতিও খুব প্রাচীন। আমরা সকলেই মনুর বংশে জন্মিয়া মানব হইয়াছি, কিম্বা আদম ও হিভার সন্ততি—এই হিসাবে সঁওতাল, ভিল, আমেরিকার রেড ইণ্ডিয়ান ও বর্ণিওর অসভ্য মানব জাতির এই সকল শাখাই তুল্যরূপ প্রাচীন,—বৈজ্ঞানিকগণের হিসাবে মর্কটাদি জীব মনুষ্যজাতি অপেক্ষাও প্রাচীন হইয়া পড়ে, এ প্রাচীনত্বের আর তাহা হইলে গৌরব কি থাকে?

 আমরা পূর্ব্বোক্ত প্রকারের প্রাচীনত্বের কথা বলিতেছি না,—যে সময় হইতে জাতীয় চিন্তার একটা উন্নতি আরব্ধ হইয়াছে, সেই সময়ের হিসাবে আমরা প্রাচীনত্বের নির্দ্দেশ করিতেছি,—মর্কটজাতির অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ মানবজাতির আদিপুরুষ হইতে প্রাচীন হইতে পারে, কিন্তু প্রথমোক্ত জীব যে ভাবে শাখা প্রশাখায় বিহার করিয়া গিয়াছে, তাহার বংশধরগণ আজও ঠিক সেই প্রণালীতেই জীবনযাত্রা নির্ব্বাহ করিতেছে—সুতরাং তাহাদের সম্বন্ধে কালের নবীনত্ব বা প্রাচীনত্ব কল্পনা মিথ্যা, কালের কোন রেখাই তাহাদের জাতীয় জীবনে পড়ে নাই; যে জাতির জীবনে কালের স্তরবিভাগ নির্দ্দিষ্ট হয়, একটা পৌর্ব্বপর্য্য এবং পরম্পরাক্রমে বিকাশের প্রণালী দৃষ্ট হয়—তাহাদের সম্বন্ধেই বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যত-প্রভৃতিরূপে কালের অসীম রূপ সীমাবদ্ধ হইয়া উঠে।

 এই হিসাবে আমরা নিশ্চয়ই বলিতে পারি। আমাদের জাতি আতি প্রাচীন,—এই ভারতবর্ষে আমাদিগের পূর্ব্বপুরুষগণ অনেক প্রকার কীর্ত্তি রাখিয়া গিয়াছেন,—বেদ তাঁহাদের কীর্ত্তি, ইহার প্রাচীনতম অথচ চিরনবীন পতকা জগতের মস্তকের উর্দ্ধে উড্ডীন হইয়া ভারতীয় চিন্তাকে জগতের পূজনীয় করিয়া রাখিয়াছে,—হিমালয়ের উচ্চতম শৈলশৃঙ্গের ন্যায় মানবজাতির ইতিহাসে