পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V)8 ঐতিকহাসিক চিত্ৰ । আরও বিকাশ প্রাপ্ত হইল। কিন্তু বেশী দিন তিনি সাংসারিক সুখভোগ করিতে পাইলেন না, কয়েক বৎসর পরেই স্বর্ণময়ী বিধবা হইলেন। মহারাণী ভবানী, মহারাণী শরৎসুন্দরী ও মহারাণী স্বর্ণময়ী তিন জনেই অল্প বয়সে বিধবা হইয়াছিলেন। পরের দুঃখ দূর করিতে যাহারা পৃথিবীতে আসিয়াছেন, র্যাহারা প্ৰতিনিয়ত পরের ভাবনা চিন্তা করিতে ব্যস্ত, তঁহাদের নিজের সাংসারিক সুখসম্ভোগ চিন্তায় আকৃষ্ট থাকিবার অবসর কোথায় ? তাই বুঝি বিধাতা তাহাদিগের পক্ষে এই কঠোর বিধান করিয়াছিলেন। মহারাণীর বিস্তৃত সম্পত্তির মধ্যে তঁহার প্রধান জমিদারী “বাহিরাবন্দ” । কেমন এক আশ্চৰ্য্য ঘটনা। এই বাহির বন্দের জমিদারগণের মধ্যে যে তিন জন তঁহাদের জীবদ্দশায় দানব্ৰতে দেশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করিয়া গিয়াছেন, তিনজনেই বাঙ্গালী হিন্দুর মণী-প্ৰথমে রাণী সত্যবতী, পরে মহারাণী ভবানী, শেষে মহারাণী স্বৰ্ণময়ী বাহিরবন্দের ভূস্বামিনী ছিলেন। প্ৰায় পঞ্চাশ বৎসরকাল অনবরত স্বধৰ্ম্মানুষ্ঠান ও পরদুঃখমোচন করিয়া মহারাণী স্বর্ণময়ী সন ১৩০৪ সালে ইহলোক পরিত্যাগ করিয়াছেন। ১৩০৪ সাল বঙ্গবাসীর নিকট কি দুর্বৎসর হইয়াই আসিয়াছিল ! ইহা অপেক্ষা দুর্বৎসর আর কখনও হইয়াছে কিনা জানিনা। প্ৰথমে ১৩০৪ সালের বৈশাখ মাস। ভীষণ দেশব্যাপী দুৰ্ভিক্ষকে সঙ্গে লইয়া দেখা দিল। কিন্তু বিপদ তো কেবল একটি আসেন, জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে এক প্ৰলয়কারী ভূমিকম্পে বঙ্গদেশ কাপিয়া উঠিল। শেষে দুর্ঘটনার উপর দুর্ঘটনা ! আষাঢ় শ্রাবণ দুই মাস যাইতে না যাইতে মহারাণী স্বর্ণময়ী স্বৰ্গারোহণ করিলেন । সে সংবাদ শুনিয়া মনে হইল যেন একটি ইন্দ্ৰপাত হইয়া গেল। মহারাণীর মৃত্যুর পর একদিন মহারাজা মণীন্দ্ৰচন্দ্রের সঙ্গে কাশীমবাজার রাজবাড়ীর কোন কোন স্থান ভূমিকম্পে ভাঙ্গিয়া গিয়াছে দেখিতে দেখিতে অন্তঃপুরের নানাস্থান-যেখানে মহারাণী বাস করিতেন তাহা দেখিয়া শেষে ভূমিকম্পের পরে মহারাণী যে বাংলো ঘরে বাস করিয়াছিলেন তাহাও দেখিলাম । য়খন মহারাজা আমাদিগকে এটা , এই ঘর, এ ঘরে এই ছিল, ও ঘরে এই