পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭০ ঐতিহাসিক চিত্ৰ । সঞ্চার হইয়া তাঁহাকে উত্তেজিত করিয়া তুলে। বাঙ্গলা অপেক্ষা বিহারের প্রতি তাহার লোলুপ দৃষ্টি নিপতিত হয়। মুস্তাফ আলিবর্দির নিকট হইতে বিহারের নায়েৰী প্রার্থনা করিয়াছিলেন, আলিবর্দি তাঁহাকে সময়ে সময়ে আশা প্ৰদানঃ করেন, কিন্তু মুস্তাফা খাঁ আলিবর্দির কথায় বিশ্বাস স্থাপন না করিয়া স্বীয় বাহুবলে তাহা অধিকারের জন্য উদ্যোগী হন। তিনি নবাবের সেনাপতিত্ব পরিত্যাগ করিয়া সসৈন্যে বিহারাভিমুখে ধাবিত হন। এই সময়ে আলিবর্দির কনিষ্ঠ ভ্রাতুষ্পত্র ও জামাতা এবং সিরাজ উদ্দৌলার পিতা জৈনুদ্দীন আহম্মদ বিহারের সহকারী শাসনকৰ্ত্তা নিযুক্ত ছিলেন। নবাবের নিকট হইতে তিনি মুস্তাফা খাঁর অভিপ্ৰায়ের সংবাদ পাইয়া মুস্তাফা খাকে বাধা প্ৰদানের জন্য প্ৰস্তুত হন। মুস্তাফা খাঁ পাটনা আক্রমণ করিয়া কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। সেই সময়ে নবাব আলিবর্দি খাঁ বিহারে উপস্থিত হইয়া জৈনুদ্দীনের সহিত যোগদান করেন, উভয়ের আক্রমণে মুস্তাফা খাকে পরাজিত হইতে হয়, এবং তিনি পরিশেষে জীবন বিসর্জন দিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। মুস্তাফা খাঁর মৃত্যুতে কিন্তু আফগান বিদ্রোহের উপশম হয় নাই। বরঞ্চ তাহা পরিশেষে ভীষণ আকার ধারণ করিয়া সমগ্ৰ বিহার প্রদেশে অশান্তির অগ্নি প্ৰজলিত করিয়াছিল, পরে সে বিষয়ের উল্লেখ করা যাইতেছে। বিহারে আফগান-বিদ্রোহ কিছুকালের জন্য প্রশমিত হইলে, বাঙ্গলা ও উড়িষ্যায় আবার মহারাষ্ট্রীয় আক্রমণের অগ্নি প্ৰজ্বলিত হইতে আরম্ভ হয়। ভাস্কর পন্তের মৃত্যু-সংবাদ অবগত হইয়া রঘুজী ভেঁাসেলা সসৈন্যে নিজেই বাঙ্গলায় উপস্থিত হন। নবাব আফগান-বিদ্রোহ দমনে ব্যস্ত থাকায় কোনরূপে রঘুজীকে শান্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। রঘুজী সেই সময়ে বৰ্দ্ধমান পৰ্য্যন্ত অগ্রসর হন। তিনি নবাবের নিকট অনেক টাকার দাবী করিয়া বসেন। নবাব তাহাতে সম্মত না হওয়ায় রঘুজী প্ৰথমে উড়িষ্যা অধিকারে কৃতসংকল্প হন। এই সময়ে রাজা দুর্লভরাম উড়িষ্যার সহকারী শাসনকৰ্ত্তা নিযুক্ত ছিলেন। তাহার অবিবেচনা ও অকৰ্ম্মণ্যতার জন্য সহজে উড়িষ্যা মহারাষ্ট্ৰীয়দিগের হন্তে পতিত হইল। দুর্লভরাম বন্দী হইয়া অবশেষে কোনরূপে নিস্কৃতিলাভ করিতে