পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ዓ 8 ঐতিহাসিক চিত্র। পরিত্যাগ করিয়াছেন গ্ৰন্থ অধ্যয়ন কালে পাঠক মাত্রেরই তাহ উপলব্ধি হইবে। সাহনামা” রচনা সম্পূর্ণ হইলে প্রতিশ্রুত পুরস্কার প্রাপ্তির আশায় গ্ৰন্থ সমভিব্যাহারে ফারদুষী সুলতানের সভায় উপস্থিত হইলেন। গ্রন্থের প্রত্যেক শ্লোকের জন্য কবিবরকে একটী করিয়া ( সুবৰ্ণ মুদ্রা (Gold Dirhem) প্ৰদান করিবেন। সুলতান এইরূপ অঙ্গীকার করিয়াছিলেন। কিন্তু ঈৰ্ষাপ্রণোদিত দুষ্টবুদ্ধি অমাত্যগণের কুমন্ত্রায় সুবর্ণমুদ্রা স্থলে প্রত্যেক শ্লোকের জন্য কবিবরকে একটী করিয়া, রজত মুদ্রা প্ৰদান করিবার অনুমতি করিলেন। স্বভাব তেজস্বী ফারাদুষী সুলতানের এই অসাধু ব্যবহারে বিশেষ মৰ্ম্মাহত হইলেন, এবং ঘূণাভরে রাজদত্ত পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করিয়া সুলতানের সান্নিধ্য পরিত্যাগ করিয়া নিজ জন্মভূমি তুস্পল্লীতে চলিয়া গেলেন। পূর্বেই বলা হইয়াছে সম্রাটের ব্যবহারে ফারদুষী মৰ্ম্মান্তিক আহত হইয়াছিলেন। সুলতানের এই নীতি বিগৰ্হিত, জঘন্য আচরণের কতকটা প্রতিশোধ দিবার মানসে তাহার বিরুদ্ধে এক বিদ্রুপান্তক কবিতা রচনা করিয়া তাহার মস্তকে প্রচণ্ড বজের ন্যায় নিক্ষেপ করিয়াছিলেন। কবিতার উপসংহার ভাগে সুলতান মামুদের নৈতিক চরিত্র, বংশ ও পিতৃপুরুষের উপর তীব্র আক্রমণ ছিল। ফারদুষী প্রেরিত এই কবিতা পাঠ করিয়া সম্রাটের চক্ষু ফুটিল--তিনি নিজের ভ্ৰম বুঝিতে পারিলেন। কবির সহিত তিনি যে অন্যায় ব্যবহার করিয়াছেন তাহা মনে করিয়া বিশেষ লজ্জিত হইলেন এবং নিজের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কবিবরের নিকট র্তাহার ন্যায্য প্ৰাপ্য ষষ্ঠ সহস্ৰ সুবর্ণমুদ্রা ও অন্যান্য বহুবিধ উপহার প্রেরণ করিলেন। কিন্তু হায়! কবির আর তাহা ভোগ করিয়া যাইতে পারিলেন না। রাজ ভৃত্যগণ যখন সুলতান প্রেরিত এই বহুমূল্য অসংখ্য উপহার লইয়া কবির গৃহপ্রাঙ্গনে প্রবেশ করিতেছিল ঠিক সেই সময়েই কবির অনুচরগণ অন্য দ্বার দিয়া ; তাহার মৃতদেহ বহন করিয়া বাহিরে লইয়া যাইতেছিল। ফারদুষীর একমাত্র দুহিতাও পিতার ন্যায় তেজস্বিনী ছিলেন, তিনি প্ৰথমে কিছুতেই রাজপ্রেরিত সেই বহুমূল্য উপঢৌকন গ্রহণে সম্মত হন নাই, কিন্তু পরে সুলতানের