পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (ষষ্ঠ বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গ-সাহিত্যে প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস । 8 No তত্ত্ব প্রভৃতি নানা তত্ত্বের বলে আমাদিগকে অনাৰ্য্যবংশোদ্ভব না। বলিয়াই ক্ষান্ত হইতে পারিতেছেন না। কিন্তু ঐ সকল বিদ্যা সাধারণ নিয়মে সিদ্ধান্ত স্থির করিতে গলদঘৰ্ম্ম হওয়ায়, তাহাদিগকে পদে পদে যে, বিশেষ বিধির আশ্ৰয় লইতে হইতেছে, তা হাতে র্তাহারা কিছু মাত্ৰ কুণ্ঠা বোধ করিতেছেন না। যদি কেহ বলেন যে, আৰ্য্যানাৰ্য্যের মধ্যে বংশগত কোনই পার্থক্য নাই, কেবল আচার-গত পার্থক্য আছে, সে কথা তাহারা গ্ৰাহা করিতে প্ৰস্তুত নহেন । আৰ্য, অনাৰ্য্য বিধাতার সৃষ্ট দুইটি জীব, ইহা বলিতেই হইবে । কারণ পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ তাহাই বলিয়া থাকেন । এই প্রসঙ্গে আমরা আর্য্য জাতির আদি বাসস্থান ও আদি ভাষারও সম্বন্ধে দুই একটি কথা বলিব । আৰ্য্যগণের আদি বাসস্থান ভারতবর্ষে ছিল না, কারণ ভারত-ভূমি আৰ্যভূমি ঠাইতেই পারে না। তবে ’মাৰ্য্যগণের আদি বাসস্থান কোথায় ? উত্তর, মধ্য এসিয়ার কাস্পিয়ান সাগরের তীর বা তন্নিকটস্থ প্ৰদেশ, অথবা স্কাণ্ডেনেবিয়া বা সুইডেন ও নর ওয়ে, কিম্বা সাইবেরিয়া বা পৃথিবীর উত্তর কেন্দ্ৰ হুইবে । কিন্তু কদাচ ভারতবর্ষ হইবে না, কেন হইবে না, তাহার সদুত্তর পাওয়া কঠিন । তবে এই টুকু পাওয়া যায় যে, প্ৰাচ্য আর্য ও প্রতীচ্যে আৰ্য্যগণের ভাষায় অনেক শব্দের যখন ঐক্য আছে, তখন নিশ্চয়ই তাহারা একটি মূল ভাষা হইতে উৎপন্ন হইয়াছে। সেই মূল ভাষা যেখানে প্রচলিত ছিল, সেই স্থলেই আদিম আৰ্য্যনিবাস । কিন্তু সে ভাষা কি ও তাহার শব্দই বা কি, তাহা কিন্তু আজিও আবিষ্কৃত হয় নাই ! প্রত্নতত্ববিদগণের মস্তিষ্কে ভিন্ন জগতে তাস্থার স্থান ছিল কি না, তাহার প্রমাণ আমরা আজিও পাই নাই। যদি বলা যায় যে, ভারতবাসী আৰ্য্যদিগের নিকট হইতে জগতে ভাষা ও জ্ঞানবিজ্ঞান প্রসারিত হইয়াছিল, এবং তঁহাদিগের নিকট হইতে পৃথিবীর সকল জাতি আপনাপন আচার-ব্যবহার শিক্ষা করিয়াছিল ।