পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (ষষ্ঠ বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ 强 ঐতিহাসিক চিত্র। এবং দ্বিশতাব্দী পরে এই ধৰ্ম্মের ক্ৰমশঃ অবনতি হইতে থাকিলে বিক্রমপুর নিবাসী দীপঙ্কর শ্ৰীজ্ঞান ( খৃঃ ৯৮০ – ১০৫৩ ) প্ৰভৃতি চল্লিশ পঞ্চাশ জন ভারতীয় পণ্ডিত তিব্বতে গমন করিয়া লুপ্তপ্রায় বৌদ্ধধৰ্ম্ম পুনরুজ্জীবিত করেন। এই পালনৃপতিগণের শাসন কালেই প্ৰসিদ্ধ উন্দন্তপুরী ও বিক্ৰমশীলা বিহার নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । ইদানীং পৌণ্ডবৰ্দ্ধনে ( আধুনিক পাণ্ডুয়ায় ) যে ধ্বংসাবশেষ পরিলক্ষিত হয় তাহার উপাদানের অধিকাংশই পালনরপতিগণের আমলে নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকিবে । চতুর্দশ শতাব্দীতে বঙ্গের স্বাধীন মুসলমান নরপতিগণ পাণ্ডুয়াকে বিবিধ মসজিদ ও অট্টালিকায় শোভিত করিয়াছিলেন সত্য, কিন্তু এই সকল মসজিদ ও অট্টালিকার উপাদান ইষ্টক ও প্রস্তর যে বৌদ্ধ বিহার এবং হিন্দু-দেবালয় ধ্বংস করিয়া সংগৃহীত হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে বিন্দুমাত্র ও সন্দেহ নাই ; কারণ পাণ্ডুয়ায় যে সমুদয় মসজিদাদি অন্যাপি বিদ্যমান আছে, তাহদের গাত্ৰস্থিত ইষ্টক ও প্রস্তরফলকে পদ্ম, হস্তী, আখ, নাগ, নাগিনী, ব্ৰহ্মা, বিষ্ণু, গণেশ প্ৰভৃতি বিবিধ হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবদেবীর মূৰ্ত্তি খোদিত রহিয়াছে। পাণ্ডুয়ার তাড়াগ-সমূহও অদ্যাবধি হিন্দু ও বৌদ্ধ নরপতিগণের মহিমা ঘোষণা করিতেছে। এই স্থানে শত শত বৃহৎ পুষ্করিণী এখনও পথিকের নয়নপথে পতিত হয় । সমস্তই উত্তর-দক্ষিণে লম্বা সুতরাং ইহারা যে মুসলমান কর্তৃক খোদিত নহে, তাহা সহজেই অনুমিত হইতে পারে । তিরিমালয়গিরি শিলালিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে, দশম শতাব্দীতে গৌড় ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যে বিভক্ত ছিল। এই সময়ে রণাশুড়ি দক্ষিণ রাঢ়ে, মহীপাল উত্তর রাঢ়ে, গোবিন্দচন্দ্র বঙ্গে ও ধৰ্ম্মপাল পুণ্ডভুক্তি বা পৌণ্ডবৰ্দ্ধনে রাজত্ব করিতেন ; দক্ষিণাত্যের রাজেন্দ্ৰ চোলদেব { খৃঃ ১০১৮-৩৫ ) ইহাদিগকে পরাভূত করিয়াছিলেন।