পাতা:ওপারের আলো - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

925 vetti দেবেশ একখানি ছবি আঁক্‌ছিলেন। রাধাের্চ রান্নাঘরে ধোয়ার মধ্যে বসে আছেন। ধোঁয়ার মধ্যে আগুনের ফিনকির মত রাধার রূপ দেখা যাচ্ছে। সন্মুখে এক রাখাল ; সে অতি কাতর ভাবে এক হাত বুকের উপর রেখে আর এক হাতের দ্বারা একটা অতি দুঃখ ও ভয়ের ভঙ্গী করে রাধাকে কি বুঝোচ্ছে, রাধা যেন পাগলের মত হ’য়ে সে কথা শুনছেন। সে কথায় যেন তার প্রাণ উড়ে গেছে, কোমল ঠোঁট দুখানি যেন অব্যক্ত বেদনায় কেঁপে উঠছে। বস্ত্ৰ অসংবৃত, চুল এলান,—এই দু’খনি ছবিতে যেন ভয় ও দুঃখ মূৰ্ত্তিমান হয়ে উঠেছে। এই ছবির নাম “সুবল সংবাদ” । যখন এই ছবি প্ৰায় শেষ হয়েছে, তখন সেই গ্রামের জমিদার কিশোর রায় সেইখান দিয়ে যাচ্ছিলেন । তিনি দেবেশকে পথের পাশে বাইরের ঘর খানিতে বসে ছবি আকিতে দেখে পান্ধীহোতে নেমে ছবিখানি দেখতে লাগলেন। রাধার চোখ দুটিতে ভয় ও প্ৰেম যেন ফুটে বেরুচ্ছে, চোখের পাতা যেন অশ্র সিক্ত । ধোয়ার মধ্যে কি করুণ, কি সুন্দর রূপ ! কিশোর রায় বল্লেন “দেবেশ, তোমার ছবি অ্যাকার কথা শুনে ছিলাম, কিন্তু তুমি যে এত সুন্দর ছবি অাকতে পার তাত জানি নাই । যা হো’ক,তুমি এইছবি শেষ ক’রে আমায় পাঠিয়ে দেবে। প্ৰতিমাসে এক একখানি ছবি চাই,তোমাকে আকাদের সরকার হোতে প্ৰতি বৎসর ৬০ ০০ টাকা দেওয়া হ’বে।” কৃতজ্ঞ চক্ষে দেবেশ বাবু জমিদার মহাশয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন, কিন্তু কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাবেন তা বুঝতে পারলেন না। কিশোর বাবু বল্লেন, “বুঝেছি,তুমি কতকগুলি বাজে বক্বে তার চেষ্টা করছি, দরকার নেই। তোমার নিজের গুণে যৎসামান্য পারিশ্রমিক আৰ্জন ক’রে, তার জন্য পরের কাছে কৃতজ্ঞ থাকার কোন কারণই নেই। আমি তোমার অ্যাক্‌বারকৌশল দেখে মুগ্ধ হয়েছি, এখন আসি।” এই বলে তিনি চলে গেলেন। দেবেশ বাবু জমিদার মহাশয়কে অনেকগুলি ছবি একে দিয়েছিলেন, তার প্ৰত্যেকটিতেই কোন না কোন বিশেষত্ব ছিল। Sy?