পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
৯৫

 কিছুদিন পরে ঐ অশ্ব যুদ্ধে গেল। তথায় এমন আঘাত লাগিল যে, সে একেবারে অকর্ম্মণ্য হইয়া গেল; সুতরাং আর যুদ্ধে যাইবার উপযুক্ত রহিল না। ইহা দেখিয়া, অশ্বস্বামী উহাকে কৃষিকর্ম্মে নিযুক্ত করিয়া দিল।

 একদিন বেলা দুই প্রহরের রৌদ্রে অশ্ব লাঙ্গল বহিতেছে; এমন সময়, সেই গর্দ্দভ, ঐ স্থানে উপস্থিত হইল, এবং অশ্বের ক্লেশ দেখিয়া মনে মনে বলিতে লাগিল, “আমি অতি মূঢ়; এজন্য তখন উহার সৌভাগ্য দেখিয়া, দুঃখ ও ঈর্ষ্যা করিয়াছিলাম। এক্ষণে উহার দুর্দ্দাশা দেখিয়া, চক্ষে জল আইসে। আর এও অতি মূঢ়, সৌভাগ্যের সময় গর্বিত হইয়া, অকারণে আমায় অপমান করিয়াছিল। তখন জানিত না যে, সৌভাগ্য চিরস্থায়ী নহে। এখন আমার অপেক্ষাও, উহার দুরবস্থা অধিক।”

অতি বেগে—খুব জোরে। দুর্ভাগ্য-দুরদৃষ্ট, দুর্দশা।

সৌভাগ্য-সুখের অবস্থা, উত্তম অবস্থা। অশ্বস্বামী-ঘোড়ার প্রভু।

নিযুক্ত—রত। গর্ব্বিত—অহঙ্কারী, অহঙ্কৃত।

অকারণে-বিনাকারণে, বিনাদোষে। চিরস্থায়ী—যাহা চিরকাল থাকে।

সিংহ ও নেকড়ে বাঘ।

একদিন, এক নেকড়ে বাঘ খোঁযাড় হইতে একটি মেষশাবক লইয়া যাইতেছিল। পথিমধ্যে এক সিংহের সহিত সাক্ষাৎ হওয়াতে, সিংহ বলপূর্ব্বক ঐ মেষশাবক