পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
১০৩

করিলে ভাল হয়। আপনার ভর্ৎসনা করিতে করিতে আমার প্রাণত্যাগ হয়।” জলমগ্ন—যে জলে ডুবিয়া গিয়াছে। উপক্রম—আরম্ভ, উদ্যম।

দৈবযোগে-হঠাৎ, দৈবাৎ। কাতযরবাক্যে—ব্যাকুলস্বরে।

মহাশয়-মহাত্মন্, মহানুভব। ভৎর্সনা-তিরস্কার।

শিকারী ও কাঠুরিয়া।

এক ব্যক্তি জঙ্গলে শিকার করিতে গিয়াছিল। ইতস্ততঃ অনেক ভ্রমণ করিয়া, সে সম্মুখে এক কাঠুরিয়াকে দেখিয়া জিজ্ঞাসিল, “ওহে, সিংহ কোন্ স্থানে থাকে বলিতে পার?” কাঠুরিয়া বলিল, “হাঁ, বলিতে পারি; তুমি আমার সঙ্গে আইস, আমি একেবারে তোমাকে সিংহই দেখাইয়া দিতেছি।” এই কথা শুনিয়া, শিকারী ব্যক্তি, ভয়ে কঁপিয়া উঠিল, এবং তাহার মুখ শুকাইয়া গেল। সে বলিল, “না ভাই, আমার সিংহের প্রয়োজন নাই; আমি কেবল সিংহের স্থান অন্বেষণ করিতেছি।” কাঠুরিয়া, তাহাকে কাপুরুষ স্থির করিয়া, ঈষৎ হাসিয়া, আপন কর্ম্ম করিতে লাগিল।

 কাপুরুষেরা মুখে বীরত্ব প্রকাশ করে; কিন্তু বীরত্ব প্রকাশের সময় উপস্থিত হইলে, তাহাদের বুদ্ধিলোপ হইয়া যায়।

কাঠুরিয়া-কাঠ-ব্যবসায়ী।  কাপুরুষ-ভীরু-স্বভাব, ভীত।

বীরত্ব-বীরের কার্য, জোর, বল। বুদ্ধি-লোপ-বুদ্ধি-নাশ।