পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
১০৫

গর্জন—চীৎকার। প্রাণসংহার—প্রাণবধ, জীবননাশ।

অসাধ্য-ক্ষমতার অতীত। গোলযোগ-গোলমাল।

সবিশেষ-আগাগোড়া। ফল-পুরস্কার, পারিতোষিক।

পিপীলিকা ও তৃণকীট।

এক পিপীলিকা, শরৎকালে শস্যের সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিল। শীতকালে, একদিন সে কিছু শস্য রৌদ্রে শুষ্ক করিবার নিমিত্ত, বাহির করিতে লাগিল। এক তৃণকীট ক্ষুধায় মৃতপ্রায় হইয়াছিল। সে, পিপীলিকাকে বলিল, “দেখ ভাই, আহার না পাইয়া, আমার প্রাণবিয়োগের উপক্রম হইয়াছে। যদি তুমি, দয়া করিয়া, তোমার সঞ্চিত শস্যের কিয়ৎ অংশ আমাকে দাও, তাহা হইলে আমার প্রাণরক্ষা হয়।” পিপীলিকা জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি সমস্ত শরৎকাল কি করিয়াছিলে?” সে বলিল, “আমি আলস্যে কাল হরণ করি নাই; সমস্ত শরৎকাল অবিশ্রামে গান করিয়াছিলাম।” এই কথা শুনিযা, পিপীলিকা ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “যখন তুমি সমস্ত শরৎকাল গান করিয়া কাটাইয়াছ, সমস্ত শীতকাল নৃত্য করিয়া কাটাও।”

শরৎকালেব সঞ্চয়, শীতকালের সংস্থান হয়

তৃীণকীট-তৃণের পোকা। মৃতপ্রায়-মড়ার মত।

প্রাণবিয়োগের-জীবননাশের। সঞ্চিত—সংগৃহীত।

কালহরণ—সময়াতিপাত, কাল কাটান। অবিশ্রামে—অনবরত।