পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
কথামালা

কেন? ক্ষেত্রস্বামী যদি প্রতিবেশীদিগের উপর ভার দিয়া নিশ্চিন্ত থাকে, তাহা হইলে শস্য কাটিতে আসিবার অনেক বিলম্ব আছে।

 পরদিন ক্ষেত্রস্বামী পুনরায় উপস্থিত হইল; দেখিল, যাহাদের উপর ভার দিয়াছিল, তাহারা শস্য কাটিতে আইসে নাই। কিন্তু শস্য সকল সম্পূর্ণ পাকিয়া উঠিয়াছিল; অতঃপর না কাটিলে ক্ষতি হইতে পারে, এই নিমিত্ত সে বলিল, আর সময় নষ্ট করা যায় না; প্রতিবেশীদিগের উপর ভার দিয়া নিশ্চিন্ত থাকিলে, বিস্তর ক্ষতি হইবে। আর তাহাদের ভরসায় না থাকিয়া, আপন ভাইবন্ধুদিগকে বলি, তাহারা সত্বর কাটিয়া দিবে। এই বলিয়া, সে আপন পুত্ত্রের দিকে মুখ ফিরাইয়া বলিল, তুমি তোমার খুড়াদিগকে আমার নাম করিয়া বলিবে, যেন তাহারা সকল কর্ম্ম রাখিয়া, কাল সকালে আসিয়া, শস্য কাটিতে আরম্ভ করে। এই বলিয়া ক্ষেত্রস্বামী চলিয়া গেল।

 সারস-শিশুগণ শুনিয়া অতিশয় ভীত হইল, এবং সারসী আসিবামাত্র কাতরবাক্যে বলিতে লাগিল, মা, আজ ক্ষেত্রস্বামী আসিয়া এই কথা বলিয়া গিয়াছে। তুমি আমাদের একটা উপায় কর। কাল তুমি আমাদিগকে এখানে ফেলিয়া যাইতে পারিবে না; যদি যাও, আসিয়া আর আমাদিগকে দেখিতে পাইবে না। সারসী