বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মেঘ ও রৌদ্র।
১২১

চারিটির সন্ধান না পাইয়া যে চারিজনকে হাতের কাছে পাইল তাহাদিগকে ধরিয়া অনিল। তাহারা আপনাদিগকে নিরপরাধী বলিয়া যোড়হস্তে কাকুতিমিনতি করিতে লাগিল। পুলিস্ বাহাদুর যখন সেই বন্দীদিগকে সঙ্গে লইবার হুকুম দিতেছেন, এমন সময় চস্‌মা-পরা শশিভূষণ তাড়াতাড়ি একখানা জামা পরিয়া তাহার বোতাম না লাগাইয়া চটিজুতা চট্‌চট্‌ করিতে করিতে উর্দ্ধশ্বাসে পুলিসের বোটের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। কম্পিতস্বরে কহিলেন, “সার্‌, জেলের জাল ছিঁড়িবার এবং এই চারিজন লোককে উৎপীড়ন করিবার তোমার কোন অধিকার নাই।”

 পুলিসের বড় কর্ত্তা তাঁহাকে হিন্দিভাষায় একটা বিশেষ অসম্মানের কথা বলিবামাত্র তিনি এক মুহূর্ত্তে কিঞ্চিৎ উচ্চ ডাঙ্গা হইতে বোটের মধ্যে লাফাইয়া পড়িয়াই একেবারে সাহেবের উপরে আপনাকে নিক্ষেপ করিলেন। বালকের মত পাগলের মত মারিতে লাগিলেন।

 তাহার পর কি হইল তিনি জানেন না। পুলিসের থানার মধ্যে যখন জাগিয়া উঠিলেন, তখন—বলিতে সঙ্কোচ বোধ হয়—যেরূপ ব্যবহার প্রাপ্ত হইলেন তাহাতে মানসিক সন্মান অথবা শারীরিক আরাম বোধ করিলেন না।



১১