রাছে, যাহাকে কোন কালে রস অন্বেষণ করিতে হয় নাই, অল্পে অল্পে রসাস্বাদ করিতে হয় নাই, তাহাকে একবার বসন্তকালের বিকশিত পুষ্পবনের মধ্যে ছাড়িয়া দেওয়া হৌক্ দেখি—বিকচোন্মুখ গোলাপের আধখোলা মুখটির কাছে ঘুরিয়া ঘুরিয়া তাহার কি আগ্রহ! একটুকু যে সৌরভ পায়, একটুকু যে মধুর আস্বাদ লাভ করে তাহাতে তাহার কি নেশা!
নিবারণ প্রথমটা কখন বা একটা গাউন্পরা কাঁচের পুতুল, কখনো বা এক শিশি এসেন্স, কখনো বা কিছু মিষ্টদ্রব্য কিনিয়া আনিয়া শৈলবালাকে গোপনে দিয়া যাইত। এমনি করিয়া একটু খানি ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত হয়। অবশেষে কখ্ন একদিন হরসুন্দরী গৃহকার্য্যের অবকাশে আসিয়া দ্বারের ছিদ্র দিয়া দেখিল, নিবারণ এবং শৈলবালা বসিয়া কড়ি লইয়া দশ পঁচিশ খেলিতেছে।
বুড়া বয়সের এই খেলা বটে! নিবারণ সকালে আহারাদি করিয়া যেন আপিসে বাহির হইল কিন্তু আপিসে না গিয়া কখ্ন অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়াছে! এ প্রবঞ্চনার কি আবশ্যক ছিল! হঠাৎ একটা জলন্ত বজ্রশলাকা দিয়া কে যেন হরসুন্দরীর চোক খুলিয়া দিল, সেই তীব্রতাপে চোকের জল বাষ্প হইয়া শুকাইয়া গেল!
হরসুন্দরী মনে মনে কহিল, আমিই ত উহাকে ঘরে আনিলাম, আমিই ত মিলন করাইয়া দিলাম, তবে আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন, যেন আমি উঁহাদের সুখের কাঁটা।