হরসুন্দরী শৈলবালাকে গৃহকার্য্য শিখাইত। একদিন নিবারণ মুখ ফুটয়া বলিল, “ছেলেমানুষ, উহাকে তুমি বড় বেশি পরিশ্রম করাইতেছ, উহার শরীর তেমন সবল নহে।”
বড় একটা তীব্র উত্তর হরসুন্দরীর মুখের কাছে আসিয়াছিল, কিন্তু কিছু বলিল না, চুপ করিয়া গেল।
সেই অবধি বউকে কোন গৃহকার্য্যে হাত দিতে দিত না। রাঁধাবাড়া, দেখাশুনা সমস্ত কাজ নিজে করিত। এমন হইল, শৈলবালা আর নড়িয়া বসিতে পারে না, হরসুন্দরী দাসীর মত তাহার সেবা করে এবং স্বামী বিদূষকের মত তাহার মনোরঞ্জন করে। সংসারের কাজ করা, পরের দিকে তাকানো যে, জীবনের কর্ত্তব্য এ শিক্ষাই তাহার হইল না।
হরসুন্দরী যে নীরবে দাসীর মত কাজ করিতে লাগিল তাহার মধ্যে ভারি একটা গর্ব্ব আছে। তাহার মধ্যে ন্যূনতা এবং দীনতা নাই। সে কহিল, তোমরা দুই শিশুতে মিলিয়া খেলা কর সংসারের সমস্ত ভার আমি লইলাম!
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
হায়, আজ কোথায় সে বল, যে বলে হরসুন্দরী মনে করিয়াছিল স্বামীর জন্য চিরজীবনকাল সে আপনার প্রেমের দাবীর অর্দ্ধেক অংশ অকাতরে ছাড়িয়া দিতে পারিবে। হঠাৎ এক দিন পূর্ণিমার রাত্রে জীবনে যখন জোয়ার আসে, তখন দুই