এমন সময় নিবারণ চোরের মত ধীরে ধীরে দ্বারের কাছে প্রবেশ করিল, ফিরিয়া যাইবে কি অগ্রসর হইবে ভাবিয়া পাইল না। হরসুন্দরী তাহা লক্ষ্য করিল কিন্তু একটি কথাও কহিল না।
তখন নিবারণ হঠাৎ একেবারে তীরের মত হরসুন্দরীর পার্শ্বে গিয়া এক নিশ্বাসে বলিয়া ফেলিল—গোটাকতক গহনার আবশ্যক হইয়াছে। জান ত অনেকগুলো দেনা হইয়া পড়িয়াছে, দেন্দার বড়ই অপমান করিতেছে—কিছু বন্ধক রাখিতে হইবে—শীঘ্রই ছাড়াইয়া লইতে পারিব।
হরসুন্দরী কোন উত্তর দিল না, নিবারণ চোরের মত দাঁড়াইয়া রহিল। অবশেষে পুনশ্চ কহিল, তবে আজ কি হইবে না?—
হরসুন্দরী কহিল—“না।”
ঘরে প্রবেশ করাও যেমন শক্ত, ঘর হইতে অবিলম্বে বাহির হওয়াও তেমনি কঠিন। নিবারণ একটু এদিকে ওদিকে চাহিয়া ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, “তবে অন্যত্র চেষ্টা দেখিগে যাই”—বলিয়া প্রস্থান করিল।
ঋণ কোথায় এবং কোথায় গহনা বন্ধক দিতে হইবে হরসুন্দরী তাহ সমস্তই বুঝিল। বুঝিল নববধূ পূর্ব্বরাত্রে তাহার এই হতবুদ্ধি পোষা পুরুষটিকে অত্যন্ত ঝঙ্কার দিয়া বলিয়াছিল, “দিদির সিন্ধুকভরা গহনা, আর আমি বুঝি একখানি পরিতে পাই না?”
নিবারণ চলিয়া গেলে ধীরে ধীরে উঠিয়া লোহার সিন্ধুক