বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মধ্যবর্ত্তিনী।
২৩

ফেলিত—জ্বরের সময় কাঁচা আমের অম্বল দিয়া ভাত খাইতে চাহিত, না পাইলে রাগিয়া কাঁদিয়া অনর্থপাত করিত—হরসুন্দরী তাহাকে, “লক্ষ্মী আমার”, “বোন আমার”, “দিদি আমার” বলিয়া শিশুর মত ভুলাইতে চেষ্টা করিত।

 কিন্তু শৈলবালা বাঁচিল না। সংসারের সমস্ত সোহাগ আদর লইয়া পরম অসুখ ও অসন্তোষে বালিকার ক্ষুদ্র অসম্পূর্ণ ব্যর্থ জীবন অকালে নষ্ট হইয়া গেল।


সপ্তম পরিচ্ছেদ।

নিবারণের প্রথমে খুব একটা আঘাত লাগিল, পরক্ষণেই দেখিল তাহার একটা মস্ত বাঁধন ছিঁড়িয়া গিয়াছে। শোকের মধ্যেও হঠাৎ তাহার একটা মুক্তির আনন্দ বোধ হইল। হঠাৎ মনে হইল এতদিন তাহার বুকের উপর একটা দুঃস্বপ্ন চাপিয়া ছিল। চৈতন্য হইয়া মুহূর্ত্তের মধ্যে জীবন নিরতিশয় লঘু হইয়া গেল। মাধবীলতাটির মত এই যে কোমল জীবনপাশ ছিঁড়িয়া গেল, এই কি তাহার আদরের শৈলবালা? হঠাৎ নিশ্বাস টানিয়া দেখিল, না, সে তাহার উদ্বন্ধন-রজ্জু।

 আর তাহার চিরজীবনের সঙ্গিনী হরসুন্দরী? দেখিল সেই ত তাহার সমস্ত সংসার একাকিনী অধিকার করিয়া তাহার জীবনের সমস্ত সুখদুঃখের স্মৃতিমন্দিরের মাঝখানে