বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩০
কথা-চতুষ্টয়।

 রামলোচন কিছু ভীত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “দুখি, আছিস্‌ না কি!”

 দুখি এতক্ষণ প্রস্তরমূর্ত্তির মত নিশ্চল হইয়া বসিয়া ছিল, তাহার নাম ধরিয়া ডাকিবা মাত্র একেবারে অবোধ বালকের মত উচ্ছ্বসিত হইয়া কাঁদিয়া উঠিল।

 ছিদাম তাড়াতাড়ি দাওয়া হইতে অঙ্গনে নামিয়া চক্রবর্ত্তীর নিকটে আসিল। চক্রবর্ত্তী জিজ্ঞাসা করিলেন, “মাগীরা বুঝি ঝগড়া করিয়া বসিয়া আছে? আজ ত সমস্ত দিনই চীৎকার শুনিয়াছি।”

 এতক্ষণ ছিদাম কিংকর্ত্তব্য কিছুই ভাবিয়া উঠিতে পারে নাই। নানা অসম্ভব গল্প তাহার মাথায় উঠিতেছিল। আপাততঃ স্থির করিয়াছিল রাত্রি কিঞ্চিৎ অধিক হইলে মৃতদেহ কোথাও সরাইয়া ফেলিবে। ইতিমধ্যে যে চক্রবর্ত্তী আসিয়া উপস্থিত হইবে এ সে মনেও করে নাই। ফস্‌ করিয়া কোন উত্তর যোগাইল না। বলিয়া ফেলিল, “হাঁ, আজ খুব ঝগড়া হইয়া গিয়াছে।”

 চক্রবর্তী দাওয়ার দিকে অগ্রসর হইবার উপক্রম করিয়া বলিল, “কিন্তু সে জন্য দুখি কাঁদে কেন রে।”

 ছিদাম দেখিল আর রক্ষা হয় না, হঠাৎ বলিয়া ফেলিল— “ঝগড়া করিয়া ছোট বৌ বড় বৌয়ের মাথায় এক দায়ের কোপ বসাইয়া দিয়াছে।”

 উপস্থিত বিপদ ছাড়া যে আর কোন বিপদ থাকিতে