পারে এ কথা সহজে মনে হয় না। ছিদাম তখন ভাবিতেছিল, ভীষণ সত্যের হাত হইতে কি করিয়া রক্ষা পাইব? মিথ্যা যে তদপেক্ষা ভীষণ হইতে পারে তাহা তাহার জ্ঞান হইল না। রামলোচনের প্রশ্ন শুনিবামাত্র তাহার মাথায় তৎক্ষণাৎ একটা উত্তর যোগাইল এবং তৎক্ষণাৎ বলিয়া ফেলিল।
রামলোচন চমকিয়া উঠিয়া কঠিল, “অ্যাঁ! বলিস্ কি! মরে নাই ত!”
ছিদাম কহিল, “মরিয়াছে!” বলিয়া চক্রবর্ত্তীর পা জড়াইয়া ধরিল।
চক্রবর্ত্তী পালাইবার পথ পায় না। ভাবিল, রাম রাম, সন্ধ্যাবেলায় এ কি বিপদেই পড়িলাম! আদালতে সাক্ষ্য দিতে দিতেই প্রাণ বাহির হইয়া পড়িবে। ছিদাম কিছুতেই তাঁহার পা ছাড়িল না, কহিল “দাদা ঠাকুর, এখন, আমার বৌকে বাঁচাইবার কি উপায় করি!”
মাম্লা মোকদ্দমার পরামর্শে রামলোচন সমস্ত গ্রামের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। তিনি একটু ভাবিয়া বলিলেন, দেখ্, ইহার এক উপায় আছে। তুই এখনি থানায় ছুটয়া যা— বল্গে, তোর বড় ভাই দুখি সন্ধ্যাবেলায় ঘরে আসিয়া ভাত চাহিয়াছিল; ভাত প্রস্তুত ছিল না বলিয়া স্ত্রীর মাথায় দা বসাইয়া দিয়াছে। আমি নিশ্চয় বলিতেছি এ কথা বলিলে ছুঁড়িটা বাঁচিয়া যাইবে।
ছিদামের কণ্ঠ শুষ্ক হইয়া আসিল; উঠিয়া কহিল, ঠাকুর,