বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শাস্তি।
৩৫

তুলিয়া কাঁধে আনিয়া ফেলিয়াছে—বেশভূষা সাজ-সজ্জায় বিলক্ষণ একটু যত্ন আছে।

 অপরাপর গ্রামবধূদিগের সৌন্দর্য্যের প্রতি যদিও তাহার উদাসীন দৃষ্টি ছিল না, এবং তাহাদের চক্ষে আপনাকে মনোরম করিয়া তুলিবার ইচ্ছাও তাহার যথেষ্ট ছিল—তবু ছিদাম তাহার যুবতী স্ত্রীকে একটু বিশেষ ভাল বাসিত। উভয়ে ঝগড়াও হইত, ভাবও হইত, কেহ কাহাকে পরাস্ত করিতে পারিত না। আর একটি কারণে উভয়ের মধ্যে বন্ধন কিছু সুদৃঢ় ছিল। ছিদাম মনে করিত চন্দরা যেরূপ চটুল চঞ্চল প্রকৃতির স্ত্রীলোক তাহাকে যথেষ্ট বিশ্বাস নাই, আর চন্দরা মনে করিত, আমার স্বামীটির চতুর্দ্দিকেই দৃষ্টি, তাঁহাকে কিছু কষাকষি করিয়া না বাঁধিলে কোন্‌ দিন হাতছাড়া হইতে আটক নাই।

 উপস্থিত ঘটনা ঘটবার কিছুকাল পূর্ব্বে হইতে স্ত্রীপুরুষের মধ্যে ভারি একটা গোলযোগ চলিতেছিল। চন্দরা দেখিয়াছিল তাহার স্বামী কাজের ওজর করিয়া মাঝে মাঝে দূরে চলিয়া যায়, এমন কি, দুই একদিন অতীত করিয়া আসে, অথচ কিছু উপার্জ্জন করিয়া আনে না। লক্ষণ মন্দ দেখিয়া সেও কিছু বাড়াবাড়ি দেখাইতে লাগিল। যখন তখন ঘাটে যাইতে আরম্ভ করিল এবং পাড়া পর্য্যটন করিয়া আসিয়া কাশী মজুমদারের মেজ ছেলেটির প্রচুর ব্যাখ্যা করিতে লাগিল।

 ছিদামের দিন এবং রাত্রিগুলির মধ্যে কে যেন বিষ মিশা-