বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৬
কথা-চতুষ্টয়।

ইয়া দিল। কাজে কর্ম্মে কোথাও একদণ্ড গিয়া সুস্থির হইতে পারে না। একদিন ভাজকে আসিয়া ভারি ভৎসনা করিল। সে হাত নাড়িয়া ঝঙ্কার দিয়া অনুপস্থিত মৃত পিতাকে সম্বোধন করিয়া বলিল—ও মেয়ে ঝড়ের আগে ছোটে উহাকে আমি সামলাইব! আমি জানি ও কোন দিন কি সর্ব্বনাশ করিয়া বসিবে!

 চন্দরা পাশের ঘর হইতে আসিয়া আস্তে আস্তে কহিল “কেন দিদি তোমার এত ভয় কিসের!” এই ত দুই যায়ে বিষম দ্বন্দ্ব বাধিয়া গেল।

 ছিদাম চোখ পাকাইয়া বলিল, এবার যদি কখনও শুনি তুই একলা ঘাটে গিয়াছিস্ তোর হাড় গুঁড়াইয়া দিব।

 চন্দরা বলিল—তাহা হইলে ত হাড় যুড়ায়!—বলিয়া তৎক্ষণাৎ বাহিরে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিল।

 ছিদাম একলম্ফে তাহার চুল ধরিয়া টানিয়া ঘরে পুরিয়া বাহির হইতে দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিল।

 কর্ম্মস্থান হইতে সন্ধ্যাবেলায় ফিরিয়া আসিয়া দেখে ঘর খোলা, ঘরে কেহ নাই। চন্দরা তিনটে গ্রাম ছাড়াইয়া একেবারে তাহার মামার বাড়ি গিয়া উপস্থিত হইয়াছে।

 ছিদাম সেখান হইতে বহুকষ্টে অনেক সাধ্যসাধনায় তাহাকে ঘরে ফিরাইয়া আনিল, কিন্তু এবার পরাস্ত মানিল। দেখিল, এক অঞ্জলি পারদকে মুষ্টির মধ্যে শক্ত করিয়া ধরা যেমন দুঃসাধ্য এই মুষ্টিমেয় স্ত্রীটুকুকেও কঠিন করিয়া ধরিয়া