বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শাস্তি।
৩৯

 সে তোমাকে প্রথমে মারিতে আসিয়াছিল?

 না।

 তোমার প্রতি কোন অত্যাচার করিয়াছিল?

 না।

 এইরূপ উত্তর শুনিয়া সকলে অবাক হইয়া গেল।

 ছিদাম ত একেবারে অস্থির হইয়া উঠিল। কহিল, উনি ঠিক কথা বলিতেছেন না। বড় বৌ প্রথমে—

 দারোগ খুব এক তাড়া দিয়া তাহাকে থামাইয়া দিল। অবশেষে তাহাকে বিধিমতে জেরা করিয়া বার বার সেই একই উত্তর পাইল—বড় বৌএর দিক হইতে কোনরূপ আক্রমণ চন্দরা কিছুতেই স্বীকার করিল না।

 এমন একগুঁয়ে মেয়েও ত দেখা যায় না। একেবারে প্রাণপণে ফাঁসিকাষ্ঠের দিকে ঝুঁকিয়াছে, কিছুতেই তাহাকে টানিয়া রাখা যায় না। চন্দরা বড় অভিমানে মনে মনে স্বামীকে বলিতেছে, আমি তোমাকে ছাড়িয়া আমার এই নবযৌবন লইয়া ফাঁসিকাঠকে বরণ করিলাম-আমার ইহজন্মের শেষবন্ধন তাহার সহিত।

 বন্দিনী হইয়া চন্দরা, একটি নিরীহ ক্ষুদ্র চঞ্চল কৌতুকপ্রিয় গ্রামবধূ, চিরপরিচিত গ্রামের পথ দিয়া, রথের তলা দিয়া, হাটের মধ্য দিয়া, ঘাটের প্রান্ত দিয়া, মজুমদারদের বাড়ির সম্মুখ দিয়া, পোষ্টঅফিস এবং ইস্কুল-ঘরের পার্শ্ব দিয়া সমস্ত পরিচিত লোকের চক্ষের উপর দিয়া কলঙ্কের ছাপ