বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫০
কথা-চতুষ্টয়।

এবং কহিল মেয়ে না দেখিয়া বিবাহ করিতে পারিবে না। মা ভাবিলেন এমন সৃষ্টিছাড়া কথাও কখনো শোনা যায় নাই, কিন্তু সম্মত হইলেন।

 সে রাত্রে অপূর্ব্ব প্রদীপ নিবাইয়া বিছানায় শয়ন করিলে পর বর্ষানিশীথের সমস্ত শব্দ এবং সমস্ত নিস্তব্ধতার পরপ্রান্ত হইতে বিজন বিনিদ্র শয্যায় একটি উচ্ছ্বসিত উচ্চ মধুর কণ্ঠের হাস্যধ্বনি তাহার কানে আসিয়া ক্রমাগত বাজিতে লাগিল। মন নিজেকে কেবলি এই বলিয়া পীড়া দিতে লাগিল যে, সকালবেলাকার সেই পদস্খলনটা যেন কোন একটা উপায়ে সংশোধন করিয়া লওয়া উচিত। বালিকা জানিল না যে, আমি অপূর্ব্বকৃষ্ণ অনেক বিদ্যা উপার্জ্জন করিয়াছি, কলিকাতায় বহুকাল যাপন করিয়া আসিয়াছি, দৈবাৎ পিছলে পা দিয়া কাদার উপর পড়িয়া গেলেও আমি উপহাস্য উপেক্ষণীয় একজন যে-সে গ্রাম্য যুবক নহি।

 পরদিন অপূর্ব্ব কনে দেখিতে যাইবে। অধিক দূর নহে, পাড়াতেই তাহাদের বাড়ি। একটু বিশেষ যত্নপূর্ব্বক সাজ করিল। ধুতি ও চাদর ছাড়িয়া সিল্কের চাপকান জোব্বা, মাথায় একটা গোলাকার পাগড়ি, এবং বার্ণিশকরা, নূতন একযোড়া জুতা পায়ে দিয়া সিন্ধের ছাতা হস্তে সে প্রাতঃকালে বাহির হইল।

 সম্ভাবিত শ্বশুরবাড়িতে পদার্পণ করিবামাত্র; মহা সমারোহ সমাদরের ঘটা পড়িয়া গেল। অবশেষে যথাকালে কম্পিত-