ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
এই অপরাধীযুগল গৃহে ফিরিয়া আসিলে মা অত্যন্ত গম্ভীরভাবে রহিলেন, কোন কথাই কহিলেন না। কাহারও ব্যবহারের প্রতি এমন কোন দোষারোপ করিলেন না যাহা সে ক্ষালন করিবার চেষ্টা করিতে পারে। এই নীরব অভিযোগ এই নিস্তন্ধ অভিমান লৌহভারের মত সমস্ত ঘরকন্নার উপর অটলভাবে চাপিয়া রহিল।
অবশেষে অসহ্য হইয়া উঠিলে অপূর্ব্ব আসিয়া কহিল, “মা, কালেজ খুলেচে এখন আমাকে আইন পড়তে যেতে হবে।”
মা উদাসীন ভাবে কহিলেন “বৌয়ের কি করবে?”
অপূর্ব্ব কহিল “বৌ এখানেই থাক্!”
মা কহিলেন “না বাপু, কাজ নাই! তুমি তাকে তোমার সঙ্গেই নিয়ে যাও।” সচরাচর মা অপূর্ব্বকে তুই সম্ভাষণ করিয়া থাকেন।
অপূর্ব্ব অভিমানক্ষুঃস্বরে কহিল “আচ্ছা!”
কলিকাতা যাইবার আয়োজন পড়িয়া গেল। যাইবার আগের রাত্রে অপূর্ব্ব বিছানায় আসিয়া দেখিল মৃন্ময়ী কাঁদিতেছে।
হঠাৎ তাহার মনে আঘাত লাগিল। বিষন্ন কণ্ঠে কহিল “মৃন্ময়ী, আমার সঙ্গে কলকাতায় যেতে তোমার ইচ্ছে করচে না?”