মৃন্ময়ী কহিল—“না।”
অপূর্ব্ব জিজ্ঞাসা করিল “তুমি আমাকে ভালবাস না?” এ প্রশ্নের কোন উত্তর পাইল না। অনেক সময় এই প্রশ্নটির উত্তর অতিশয় সহজ কিন্তু আবার এক এক সময় ইহার মধ্যে মনস্তত্ত্বঘটিত এত জটিলতার সংস্রব থাকে যে, বালিকার নিকট হইতে তাহার উত্তর প্রত্যাশা করা যায় না!
অপূর্ব্ব প্রশ্ন করিল “রাখালকে ছেড়ে যেতে তোমার মন কেমন করচে?”
মৃন্ময়ী অনায়াসে উত্তর করিল “হাঁ।”
বালক রাখালের প্রতি এই বি, এ, পরীক্ষোর্ত্তীর্ণ কৃতবিদ্য যুবকের সূচির মত অতি সূক্ষ্ণ অথচ অতি সুতীক্ষ্ণ ঈর্ষ্যার উদয় হইল। কহিল “আমি অনেক কাল আর বাড়ি আসতে পাব না।” এই সংবাদ সম্বন্ধে মৃন্ময়ীর কোন বক্তব্য ছিল না। “বোধ হয় দু-বৎসর কিম্বা তারো বেশি হতে পারে।” মৃন্ময়ী আদেশ করিল “তুমি ফিরে আস্বার সময় রাখালের জন্যে একটা তিনমুখো রাজাসের ছুরি কিনে নিয়ে এসো।”
অপূর্ব্ব শয়ান অবস্থা হইতে ঈষৎ উত্থিত হইয়া কছিল “তুমি তা হলে এইখানেই থাকবে?”
মৃন্ময়ী কহিল “হাঁ, আমি মায়ের কাছে গিয়ে থাক্ব!”
অপূর্ব্ব নিশ্বাস ফেলিয়া কহিল “আচ্ছা, তাই থেকো! যতদিন না তুমি আমাকে আসবার জন্যে চিঠি লিখ্বে, আমি আস্ব না। খুব খুসি হলে?”