বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কথা
৩৯

উদিল প্রচণ্ড সূর্য। গ্রামবধূগণ
গৃহে ফিরে গেছে করি স্নান সমাপন
সিক্তবস্ত্রে, কাংসঘটে লয়ে গঙ্গাজল।
ভেঙে গেছে প্রভাতের হাট; কোলাহল
থেমে গেছে দুই তীরে; জনপদ-বাট
পান্থহীন। বটতলে পাষাণের ঘাট,
সেথায় বাঁধিল নৌকা স্নানাহারতরে
কর্ণধার। তন্দ্রাঘন বটশাখা ’পরে
ছায়ামগ্ন পক্ষীনীড় গীতশব্দহীন
অলস পতঙ্গ শুধু গুঞ্জে দীর্ঘ দিন;
পক্কশস্যগন্ধহরা মধ্যাহ্নের বায়ে
শ্যামার ঘোম্‌টা যবে ফেলিল খসায়ে
অকস্মাৎ,—পরিপূর্ণ প্রণয়পীড়ায়
ব্যথিত ব্যাকুল বক্ষ—কণ্ঠরুদ্ধপ্রায়
বজ্রসেন কানে কানে কহিল শ্যামারে—
“ক্ষণিক শৃঙ্খল মুক্ত করিয়া আমারে
বাঁধিয়াছ অনন্ত শৃঙ্খলে। কী করিয়া
সাধিলে দুঃসাধ্য ব্রত কহ বিবরিয়া।
মোর লাগি কী করেছ জানি যদি প্রিয়ে
পরিশোধ দিব তাহা এ জীবন দিয়ে