বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
কথা

রক্তে ভেসে গেল ভূমি। হেরি নিজ কাজ
মাথা নাড়ি কহে গুরু, “বুঝিলাম আজ,
আমার সময় গেছে। পাপ তরবার
লঙ্ঘন করিল আজি লক্ষ্য আপনার
নিরর্থক রক্তপাতে। এ বাহুর 'পরে
বিশ্বাস ঘুচিয়া গেল চিরকালতরে।
ধুয়ে মুছে যেতে হবে এ পাপ, এ লাজ-
আজ হতে জীবনের এই শেষ কাজ।”


পুত্র ছিল পাঠানের বয়স নবীন,
গােবিন্দ লইল তারে ডাকি। রাত্রিদিন
পালিতে লাগিল তারে সন্তানের মতাে
চোখে চোখে। শাস্ত্র আর শস্ত্রবিদ্যা যত
আপনি শিখালাে তারে। ছেলেটির সাথে
বৃদ্ধ সেই বীরগুরু সন্ধ্যায় প্রভাতে
খেলিত ছেলের মতাে। ভক্তগণ দেখি
গুরুরে কহিল আসি, “একি প্রভু, একি!
আমাদের শঙ্কা লাগে। ব্যাঘ্রশাবকেরে
যত যত্ন কর তার স্বভাব কি ফেরে।
যখন সে বড়াে হবে তখন নখর,
গুরুদেব, মনে রেখাে হবে যে প্রখর।”