বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
কথা

পরদিন বেলা গেলে গােবিন্দ একাকী
বাহিরিলা; পাঠানেরে কহিলেন ডাকি,
“অস্ত্র হাতে এসাে মাের সাথে।” ভক্তদল
“সঙ্গে যাব, সঙ্গে যাব” করে কোলাহল।
গুরু কন, “যাও সবে ফিরে।”

    দুই জনে,
কথা নাই, ধীরগতি চলিলেন বনে
নদীতীরে। পাথর-ছড়ানাে উপকূলে
বরষার জলধারা সহস্র আঙুলে
কেটে গেছে রক্তবর্ণ মাটি। সারি সারি
উঠেছে বিশাল শাল, তলায় তাহারি
ঠেলাঠেলি ভিড় করে শিশু তরুদল
আকাশের অংশ পেতে। নদী হাঁটুজল,
ফটিকের মতাে স্বচ্ছ, চলে এক ধারে
গেরুয়া বালির কিনারায়। নদীপারে
ইশারা করিল গুরু, পাঠান দাঁড়ালাে।
নিবে-আসা দিবসের দগ্ধ-রাঙা আলো
বাদুড়ের পাখা-সম দীর্ঘ ছায়া জুড়ি,
পশ্চিমপ্রান্তর-পারে চলেছিল উড়ি
নিঃশব্দ আকাশে। গুরু কহিলা পাঠানে,
'মামুদ, হেথায় এসাে, খোঁড়াে এইখানে।'