পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ শিক্ষা
১০৩

উঠিল সে বালু খুঁড়ি একখণ্ড শিলা
অঙ্কিত লােহিত রাগে। গােবিন্দ কহিলা,
“পাষাণে এই-যে রাঙা দাগ, এ তােমার
আপন বাপের রক্ত। এইখানে তার
মুণ্ড ফেলেছিনু কেটে, না শুধিয়া ঋণ,
না দিয়া সময়। আজ আসিয়াছে দিন,
রে পাঠান, পিতার সুপুত্র হও যদি
খােলো তরবার, পিতৃঘাতকেরে বধি
উষ্ণরক্ত-উপহারে করিবে তর্পণ
তৃষাতুর প্রেতাত্মার।”

   বাঘের মতন
হুংকারিয়া লম্ফ দিয়া রক্তনেত্রে বীর
পড়িল গুরুর 'পরে- গুরু রহে স্থির
কাঠের মূর্তির মতাে। ফেলি অস্ত্রখান
তখনি চরণে তাঁর পড়িল পাঠান;
কহিল, “হে গুরুদেব, লয়ে শয়তানে
কোরাে না এমনতরাে খেলা। ধর্ম জানে
ভুলেছিনু পিতৃরক্তপাত; একাধারে
পিতা গুরু বন্ধু ব'লে জেনেছি তােমারে
এত দিন। ছেয়ে থাক মনে সেই স্নেহ,
ঢাকা প'ড়ে হিংসা যাক ম'রে। প্রভু, দেহো।